বালুর বস্তা ফেলে স্কুলটি রক্ষার চেষ্টা করা হলেও শেষ রক্ষা হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে দিন কাটছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
১৯৬৫ সালে উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি সরকারি হয় ১৯৭২ সালে। আর ১৯৯৪ সালে নির্মাণ করা হয় টিন শেড ভবন। বর্তমানে এখানে শিক্ষার্থী রয়েছে ২৩৫ জন। শিক্ষকের সংখ্যা পাঁচ।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আজিজুল ইসলাম বলেন, “এক সময় নদী থেকে অনেক দূরে ছিল স্কুল। নদী ভাঙতে ভাঙতে গত এপ্রিল মাসে স্কুলের একেবারে পাশে এসে ঠেকেছে।
“মার্চ মাসে স্কুলমাঠ তিস্তায় চলে গেছে। আর মাত্র ১৫ হাত ভাঙলেই স্কুলটি তিস্তায় বিলীন হয়ে যাবে।”
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মনোয়ারা বেগম ও ছাইদুল হক, চতুর্থ শ্রেণির আফসানা মিমি, রুবেল মিয়া বলে, পানির ঢেউ যখন জোরে ধাক্কা মারে তখন স্কুল ঘর কেঁপে ওঠে। তখন সবাই স্কুলের বাইরে চলে যায়।
অভিভাবক মমিনুল ইসলাম বলেন, “আমার দুই ছেলেমেয়ে এই স্কুলে পড়ে। এ অবস্থায় তাদের স্কুলে পাঠাতে ভয় হয়। কিন্তু আশপাশে আর কোনো স্কুলও নেই।
“তাই বাধ্য হয়ে এখানেই তাদের পাঠাতে হচ্ছে। এবার পানি বাড়তে শুরু করলে স্কুলটি রক্ষা করা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুল হাসান বলেন, “যেভাবে নদী ভাঙছে তাতে স্কুল রক্ষা করা সম্ভব হবে কি না বলা মুশকিল। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস কোনো রকমে নেওয়া হয়।
“মাঠ নদীতে চলে যাওয়ায় অ্যাসেম্বলি করার মতো জায়গাও নেই। ভাঙনের ভয়ে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী নিয়মিত স্কুলে আসে না।”
বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
আলমবিদিতর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আফতাবুজ্জামান বলেন, “ক্লাস করতে এসে প্রতি মুহূর্তে শিশুদের ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হয়। চলাফেরাও করতে হয় খুব সাবধানে।”
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, “বিদ্যালয়টি প্রচণ্ড হুমকির মুখে রয়েছে। তবে নদী ভাঙন থেকে বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড এরই মধ্যে বালুর বস্তা ফেলেছে।”