বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় কমিটির ডাকে রোববার সকাল ৬টা থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয় বলে সংগঠনের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক জানান।
সকাল থেকে এ বিভাগের চার জেলা থেকে কোনো দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। আঞ্চলিক বাস চলাচলও বন্ধ থাকায় বিভিন্ন জেলায় যাত্রীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।
সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে না গেলেও নগরীতে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। অটোরিকশা ও হালকা যানবাহনও চলাচল করতে দেখা গেছে।
সেলিম আহমদ জানান, গত মে দিবসে অটোরিকশা শ্রমিকদের উপর হামলা ও তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, বিভিন্ন পৌরসভার পরিবহন কর প্রত্যাহার, সিলেট-কোম্পানিগঞ্জ সড়কে মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন বন্ধ করা এবং জেলা শ্রমিক লীগ সভাপতি এজাজুল হক এজাজের ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে তাদের এই ধর্মঘট।
এই পাঁচ দফা দাবিতে গত ১১ মে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দেয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় কমিটি। কিন্তু প্রশাসন সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ করেন সেলিম আহমদ।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পর্যাপ্ত টিকেট না থাকায় সবাইকে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
বগুড়া থেকে তিন বন্ধুসহ সিলেটে বেড়াতে আসা রবিন বলেন, “সকালে বাস টার্মিনালে গিয়ে শুনি ধর্মঘট। এখন কীভাবে যাব বুঝতে পারছি না; কখন বাস ছাড়বে তাও কেউ বলতে পারছে না।”
সিলেটের জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শ্রমিক নেতাদের সাথে বৈঠকে বসার কথা চলছে। আশা করি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।”
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, আকস্মিক ধর্মঘটের কারণে সাধারণ যাত্রীরা বিপাকে পড়েছেন।
রোববার সকালে বাস টার্মিনালে এসে তারা ধর্মঘটের কথা জানতে পারেন।
এ অবস্থায় কেউ কেউ বিকল্প যানে তারা গন্তব্যে পৌঁছার চেষ্টা করছেন। কেউবা ফিরে যাচ্ছেন।
হবিগঞ্জ মটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক শংখ শুভ্র রায় বলেন, গত ১ মে সিলেটে মে দিবসের মিছিলে শ্রমিক লীগ নেতা এজাজুল হক এজাজের অনুসারীরা প্রবেশ করে অটোরিকশা ভাংচুর করেন। এরপর এ ঘটনায় থানায় পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়।
এই মামলা প্রত্যাহারসহ ৫ দফা দাবিতে গত ১১ মে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব সমস্যা সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ কারণেই এ ধর্মঘট।