রেইনট্রিতে ধর্ষণ: ‘গ্রেপ্তারদের মুক্তির’ মোনাজাত করে পালালেন ইমাম

বহুল আলোচিত বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তারদের ‘মুক্তি ও আপন জুয়েলার্সকে রক্ষায়’ কক্সবাজারে একটি মসজিদে বিশেষ মোনাজাত করানোর অভিযোগ উঠেছে ইমামের বিরুদ্ধে।

কক্সবাজার প্রতিনিধিশংকর বড়ুয়া রুমি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2017, 07:22 AM
Updated : 20 May 2017, 08:29 AM

জেলা শহরের বইল্লাপাড়ার বায়তুশ শরফ জামে মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজে এ ঘটনা ঘটে।

নামাজে আসা লোকজন তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে এর ব্যাখ্যা চাইলে ইমাম রিদুয়ানুল হক কিছু না বলে দ্রুত সেখান থেকে সটকে পড়েন বলে মুসল্লিরা জানিয়েছেন।

জুমার নামাজে আসা মাহবুব কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নামাজ আদায় করার সময় আমি প্রথম কাতারে দাঁড়িয়েছিলাম। নামাজ শেষে ইমাম মাওলানা রিদুয়ানুল হক বিশেষ মোনাজাতের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

“এসময় মসজিদটি ও বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এগিয়ে গিয়ে ইমাম সাহেবকে কানে কানে কী যেন বলেন। এরপরই বিশেষ মোনাজাতে এ ঘটনা ঘটে।”

মাহবুব কামাল বলেন, ইমাম রিদুয়ানুল হক ঢাকার বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তারদের মুক্তি এবং আপন জুয়েলার্সকে রক্ষার জন্য মোনাজাত শুরু করেন। এতে নামাজে আসা লোকজন প্রতিবাদ করে এর ব্যাখা চাইলে ইমাম সাহেব দ্রুত মসজিদ থেকে সটকে পড়েন।

একই কথা বলেন নামাজে অংশ নেওয়া স্থানীয় হেলাল উদ্দিন, সাইফুর রহমান, আবুল বাশারসহ বেশ কয়েকজন।

ধর্ষণ মামলার আরেক আসামি নাঈম আশরাফ বা হালিম

কক্সবাজার শহরে সুপরিসর তিন তলাবিশিষ্ট বায়তুশ শরফ জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে প্রতি শুক্রবার কয়েক হাজার মুসল্লি জমায়েত হন। এ ঘটনার পর মুসল্লিরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।

ক্ষুব্ধ আবুল বাশার বলেন, নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা উত্তেজিত হয়ে ‘ন্যক্কারজনক’ এ ঘটনার প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যা চাইলে ইমাম সাহেব দ্রুত সটকে পড়েন।

পরে বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর কাছেও এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান এবং কারণ জানতে চাওয়া হয় বলে জানান বাশার।

এ বিষয়ে ইমাম মাওলানা রিদুয়ানুল হকের মোবাইল ফোনে কল করে সাড়া না পাওয়ার পর এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।

মসজিদসহ বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম থাকার কথা জানিয়ে বলেন, “আমিও স্থানীয়দের কাছ থেকে এ ধরনের ঘটনার ব্যাপারে শুনেছি। তবে জুমার নামাজের পর ইমামের কাছে গিয়ে কানে কানে কিছু বলার বিষয়টিও সত্য নয়।

“একজন লোকের অনুরোধে এ ধরনের বিশেষ মোনাজাত করা হয়েছে বলে ইমাম সাহেব আমার কাছে স্বীকার করেছেন।”

তবে এটিকে ‘অনভিপ্রেত, নিন্দনীয় ও দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেন সিরাজুল ইসলাম।