বগুড়ায় মাসুক হত্যাকাণ্ড: এক কিশোরের স্বীকারোক্তি

বগুড়ায় স্কুলছাত্র মাসুক ফেরদৌস হত্যা মামলার আসামি এক কিশোর আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2017, 04:59 PM
Updated : 18 May 2017, 04:59 PM

তবে এ স্বীকারোক্তিকে ‘আসল ঘাতককে আড়াল করার চেষ্টা’ বলে মনে করছেন নিহত মাসুকের বাবা জাসদ নেতা এমদাদুল হক ইমদাদ।

বৃহস্পতিবার বিকালে বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. কামরুজ্জামানের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় বিদারুল ইসলাম নাঈম (১৫) নামের ওই কিশোরের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

বুধবার রাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করে বলে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসলাম আলী জানান।

গত শনিবার (১৩ মে) রাতে বগুড়া শহরের মাটিডালী হাজীপাড়া এলাকায় এসওএস হারম্যান মেইনার স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র মাসুক ফেরদৌসকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

ওই ঘটনায় মাসুকের বাবা ইমদাদ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের বাবা মাহবুব হামিদ তারা ও তারার ছোট ভাই ওয়ার্ড কাউন্সিলর মেজবাউল হামিদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

শহরের এমপিওভুক্ত মাটিডালি উচ্চবিদ্যালয়ের ভেতর বছর পাঁচেক আগে মাহবুব হামিদ বর্ণালী বিদ্যায়তন নাম দিয়ে কেজি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করেন। এ নিয়ে ইমদাদের সঙ্গে তারার বিরোধের জেরে মাসুককে হত্যা করা হয় বলে প্রথম থেকেই ইমদাদ অভিযোগ করে আসছিলেন।

বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসলাম আলী বলেন, “বুধবার রাত ২টায় শাজাহানপুর উপজেলা থেকে নাইমকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ (বৃহস্পতিবার) আদালতে হত্যাকাণ্ড বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।”

পূর্ব বিরোধের জের ধরে মাসুককে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় এবং এ ঘটনায় মাহবুব হামিদ তারার জড়িত থাকার কথা নাইম জানায়নি, বলেন পরিদর্শক আসলাম।

বুধবার রাতে একটি টেলিভিশনে মাহবুব হামিদ তারা টেলিফোন সংলাপে বলেন, “আমি অনুষ্ঠানে আসার আগে জেনেছি মূল আসামি নাইম গ্রেপ্তার হয়েছে। তার কাছ থেকেই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি পরিষ্কার হবে।”

বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পরিদর্শক আসলাম আলীর কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাহবুব হামিদ তারা কীভাবে কার কাছ থেকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানলেন।?”

এ ব্যাপারে মাসুকের বাবা ইমদাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রধান আসামি মাহবুব হামিদ তারা ধরিয়ে দিয়েছেন নাঈমকে। আর নাঈম এমন স্বীকারোক্তি দিলে তা অবশ্যই পুলিশের শেখানো। পুলিশ আসল ঘাতককে আড়াল করার চেষ্টা করছে।”

তিনি এমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অবশ্যই প্রত্যখ্যান করবেন বলে জানান।

মাহবুব হামিদ সাংবাদিকদের বলেন, “ইমদাদের বক্তব্য সঠিক নয়। আমিও চেয়েছি, মূল খুনি গ্রেপ্তার এবং রহস্য উদঘাটন হোক। আমি কেন নাইমকে ধরিয়ে দিতে যাব।”

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, আদালতের নির্দেশে শুক্রবার সকালে নাঈমকে যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হবে।”