চাকরি আশা করছেন প্রধানমন্ত্রীকে রিকশায় ঘোরানো টিপু

নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল পরিদর্শনে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রিকশায় ঘোরানোর পর সরকার প্রধানের কাছ থেকে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাবেন বলে আশা করছেন চালক টিপু সুলতান।

লাভলু পাল চৌধুরী নেত্রকোনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2017, 01:53 PM
Updated : 18 May 2017, 03:34 PM

এর আগে পৈত্রিক এলাকা গোপালগঞ্জে গিয়ে ভ‌্যানে চড়ার পর সেটির চালক ইমাম শেখকে বঙ্গবন্ধুকন্যা বিমান বাহিনীতে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ায় নিজের ক্ষেত্রেও একই রকম আশা দেখছেন নেত্রকোনার সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিরা গ্রামের এই যুবক।

বৃহস্পতিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাওর এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে খালিয়াজুড়ীতে রিকশায় চড়েন প্রধানমন্ত্রী। পিআইডির পাঠানো একটি ছবিতে সরকার প্রধানকে ইট বিছানো একটি রাস্তায় রিকশা আরোহী হিসেবে দেখা যায়।

পরে ওই রিকশার চালক টিপু সুলতান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বেলা আড়াইটার দিকে আমার রিকশায় চড়ে খালিয়াজুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ৫০ গজ দূরের ডাকবাংলায় যান প্রধানমন্ত্রী। মিনিট পাঁচেকের যাত্রা।”

আগাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে হাওরে ফসলহানির পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে খালিয়াজুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ে অংশ নেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা।

সেখান থেকেই প্রধানমন্ত্রীকে ওই ডাকবাংলোয় নিয়ে যেতে জেলা প্রশাসন তাকে আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল জানিয়ে টিপু বলেন, এজন্য তাকে রিকশাসহ নেত্রকোনা থেকে খালিয়াজুড়ী নিয়ে যাওয়া হয়।

যাত্রা শেষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাকে তিন হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানান টিপু।

প্রধানমন্ত্রী রিকশায় উঠে তার নাম জিজ্ঞেস করেছেন জানিয়ে টিপু বলেন, “লেখাপড়া কতদূর করেছি সে কথাও জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আমার রিকশায় উঠায় আমি খুব খুশি।”

নেত্রকোনা সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিরা গ্রামের রিকশা মোকবুল হোসেনের ছেলে টিপু নবম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। বাবা- মা ছাড়া পাঁচ ভাই ও পাঁচ বোনের সংসারে তিনি দ্বিতীয় সন্তান। বাবা কৃষি কাজ করেন।

বড় সংসারের স্বচ্ছলতার আশায় স্থায়ী একটি চাকরির আশা করা টিপু বলেন, “আমার যোগ্যতা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী আমাকে যদি একটা চাকরি দেয় তাহলে আমার সংসারটা ভালো চলবে।”

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গীপাড়ায় গিয়ে যার ভ্যানে চড়েছিলেন, সেই ইমাম শেখ ৩১ জানুয়ারি বিমান বাহিনীতে বেকারির ‘সরবরাহকারী’ হিসেবে অস্থায়ী ভিত্তিতে যোগ দেন।

বিমান বাহিনীর নিজস্ব বেকারিতে উৎপাদিত পণ্য বাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি ও শাহিন কলেজের ২৫/৩০টি দোকানে সরবরাহের কাজ করা ইমামের প্রাথমিক অবস্থায় প্রায় আট হাজার টাকা বেতন পাওয়ার কথা জানিয়েছিল বিমান বাহিনী কর্তৃপক্ষ।

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় চাকরি দেওয়ার খবর পৌঁছে দেওয়ার সময় ইমামের অসুস্থ বাবা আব্দুল লতিফ শেখের চিকিৎসা ও ঘরবাড়ি মেরামতের জন্য বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।