মুশফিকের বাবার স্কুলের অনুমোদন নেই

বগুড়া শহরে জাসদনেতার ছেলেকে হত্যায় মুশফিকুর রহিমের বাবা মাহবুব হামিদ তারার বিরুদ্ধে যে স্কুলকে কেন্দ্র করে অভিযোগ, সেটা চলছে অনুমোদন ছাড়াই।

জিয়া শাহীন বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 May 2017, 11:45 AM
Updated : 16 May 2017, 11:48 AM

শহরের এমপিওভুক্ত মাটিডালি উচ্চবিদ্যালয়ে পাঠ দেওয়া হত তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত। বছর পাঁচেক আগে মাহবুব হামিদ সেখানে পঞ্চম থেকে দশম এবং বর্ণালী বিদ্যায়তন নাম দিয়ে কেজি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের তালিকায় বর্ণালী বিদ্যায়তন নামে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুমতি নেই।”

একই ক্যাম্পাসে দুটি নামে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও থাকতে পারে না বলে জানিয়েছেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোপাল চন্দ্র।

তিনি বলেন, প্রাথমিক স্তর থেকে বিদ্যালয় পরিচালনা করলেও তা একই নামে হতে হবে।

একই ক্যাম্পাস, একই ভবন, বেঞ্চ, চেয়ার, টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ব্যবহার করেও সেখানে আলাদা নাম দিয়ে, আলাদা ব্যাংক হিসাব খুলে বর্ণালী বিদ্যায়তন চালান মুশফিকুরের বাবা মাহবুব হামিদ।

এই বিদ্যালয় নিয়ে মাহবুব হামিদের সঙ্গে বিরোধে জড়ান ওই এলাকার জাসদনেতা আইনজীবী ইমদাদুল হক।

এরই মধ্যে গত শনিবার রাতে ইমদাদুলের ছেলে মাসুক ফেরদৌসকে (১৬) পিটিয়ে আহত করার পর তার মৃত্যু হয়।

ইমদাদুল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়টির অবকাঠামো ব্যবহার করে, সব নিয়ম-কানুন ভেঙে মুশফিকুর রহিমের বাবা মাহবুব হামিদ এখানে একটি প্রাইভেট বিদ্যালয় চালু করে অর্থ উপার্জন করেন।

“এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে আমি প্রতিবাদ করার কয়েক দিন পরেই মাসুককে খুন করা হয়। আমার ছেলে খুনে মুশফিকুর রহিমের বাবা দায়ী।”

মাটিডালি এলাকার আরেক আইনজীবী হাবিবুর রহমান অভিযোগ করেন, মাহবুব হামিদ প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টির ভেতরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন।

এসব বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে মাহবুব হামিদ বলেন, “সবকিছু নিয়ম মেনেই করা হয়েছে।”

একটি বিদ্যালয়ের ভেতরে অরেকটি বিদ্যালয় চালুর উদ্দেশ্য কী তা জিজ্ঞেস করলেও তিনি বলেন, “সবকিছু নিয়ম মেনেই করা হচ্ছে।”

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোপাল চন্দ্র বলছেন, মাটিডালি উচ্চবিদ্যালয়ের ভেতরে বর্ণালী বিদ্যায়তন নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে তা তার জানা ছিল না।

তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রায়হানা ইসলাম বলেন, “শিক্ষা কর্মকর্তার এটা না জানার কথা না। আমি তাকে ব্যবস্থা নিতে বলব।”