শুক্রবার সকালে অভিযান পুনরায় শুরুর দুই ঘণ্টা পর গোদাগাড়ী থানার ওসি হিফজুল আলম মুন্সি এ তথ্য জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বোমা আর পিস্তল ছাড়াও দুটি গুলি ও একটি ম্যাগাজিন পাওয়া গেছে বাসার ভেতরে। আমাদের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল বোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করতে কাজ করছে।”
বাড়ির ভেতরে নতুন করে আর কারও লাশ পাওয়া যায়নি বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
আগের দিন সকালে এই অভিযানে পাঁচজন নিহত হন, যারা সবাই জেএমবির সদস্য বলে পুলিশের ভাষ্য। তার আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসা জঙ্গিদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন এক ফায়ার সার্ভিস কর্মী।
উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের হাবাসপুর মাছমারা বেনীপুর গ্রামে ওই বাড়ি ঘিরে পুনরায় অভিযান শুরুর আগে মাইকিং করে উৎসুক জনতাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আশপাশের এক বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকায় সবাইকে নিরাপত্তার স্বার্থে যার যার বাড়িতে অবস্থান করতে অনুরোধ করা হয়।
সকাল ৮টা ৫০ এ ওই বাড়ির দিক কয়েকটি গুলির শব্দ পাওয়া যায়। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, তাদের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যরা ভেতরে প্রবেশের আগে সতর্কতা হিসেবে গুলি ছোড়া হয়েছে, সে কারণেই গুলির শব্দ।
পুলিশ সদর দপ্তরের এলআইসি (লফুল ইন্টারসেপশন সেন্টার) থেকে তথ্য পেয়ে বুধবার রাত ৩টার দিকে থানা পুলিশের সদস্যরা ওই বাড়ি ঘিরে ফেলেন।
বৃহস্পতিবার সকালে ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে আসার জন্য হ্যান্ড মাইকে জঙ্গিদের আহ্বান জানানো হয়। জবাবে বাড়ি থেকে দুই রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়।
এরপর পুলিশ সেখানে অভিযানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ওই বাড়িতে পানি ছিটানো শুরু করলে এক শিশুকে কোলে নিয়ে আরেক বালককে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়।
এর কিছু সময় পর ওই বাড়ি থেকে দুই নারীসহ কয়েকজন বেরিয়ে আসে এবং বাইরে থাকা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তাদের হামলায় সাত পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য আহত হন। পরে হাসপাতালে মারা যান ফায়ার সার্ভিসের ফায়ারম্যান আবদুল মতিন।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ওই হামলার পর বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জঙ্গিরা ‘আত্মঘাতী’ হয়। তবে সংবাদ মাধ্যমে আসা ভিডিওতে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের গুলি ছুড়তেও দেখা গেছে।
তিনি বলেন, “ভেতরে আর কেউ নেই বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতরা জেএমবির সদস্য এবং সবাই আত্মঘাতী হয়েছে।”
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নিহতরা হলেন- ওই বাড়ির মালিক সাজ্জাদ হোসেন, তার স্ত্রী বেলী, তাদের ছেলে আলামিন, মেয়ে কারিমা এবং আশরাফুল নামের এক জঙ্গি, যার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের দেবীপুর গ্রামে।