বৃহস্পতিবার নওগাঁয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে তিনি বলেন, বিএমএসহ সকল পেশাজীবী সংগঠন রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করলেও একমাত্র বিচার বিভাগের সাথে সম্পৃক্তরা কোনো দলের হয়ে কাজ করেন না। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে কাজ করেন।
বিচার বিভাগ, মানবাধিকার ও জনগণের নিরাপত্তা বিধানের জন্য সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আইনের শাসন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত আছে। এই দেশে কোনো সাম্প্রদায়িকতা নেই।
“তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ আমি এই দেশের প্রধান বিচারপতি।”
বিচারপতি এসকে সিনহা আইনজীবী ও বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, মধ্যযুগীয় সভ্যতা থেকে সভ্যতার ক্রমবিকাশ ঘটিয়ে আধুনিক সভ্যতার রূপ দিয়েছেন আইনজীবীরাই। আমেরিকাসহ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই কমন আইন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আইনজীবীরাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
বর্তমানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা, দুর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও তাদেরই ভূমিকা রাখতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
বিচারকদের প্রতি তিনি সকল পুরাতন মামলা অবিলম্বে নিষ্পত্তি করার আহবান জানান। তা না হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দেন।
আইনজীবীদের সততা প্রসঙ্গে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, পিপি, জিপিসহ সরকারি আইনজীবী ও প্লিডারদের যে সন্মানী দেওয়া হয় তা সন্তোষজনক নয়। এই কারণে অনেক সময় তারা অন্যরকম ভূমিকা নিয়ে থাকেন।
মাদ্রাসা শিক্ষক, সুপারিটেনডেন্টসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান জানান বিচারপতি এসকে সিনহা।
“অপরিচিত কাউকে দেখলেই পুলিশে খবর দিতে হবে। পুলিশের একার পক্ষে কোনোভাবেই জঙ্গিবাদ দমন করা সম্ভব নয়।”
এক্ষেত্রে তিনি বিচারকদের আরও কঠোর হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, পুলিশ চাইলে ওইদিনই তাদের রিমান্ডে দিতে হবে।
সন্ধ্যায় নওগাঁ সার্কিট হাউস মিলনায়তনে বিচার বিভাগীয় এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান বিচারপতি সিনহা।
সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. আরিফুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মো. আমিনুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. মোজাম্মেল এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম ফজলে রাব্বী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন রওশন আরা খানম, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বাকী উল্লাহ, নওগাঁ জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সরদার সালাহ উদ্দিন মিন্টু, সাধারণ সম্পাদক আবু বেলাল হোসেন জুয়েল, পিপি আব্দুল খালেক এবং জিপি মোস্তাফিজুর রহমান ফিরোজ।
অনুষ্ঠান শেষে প্রধান বিচারপতি জেলা জজশিপের বিভিন্ন আদালত এবং আদালতের বিচার কাজ পরিদর্শন করেন।