বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে দেওয়া শারমিনের এসএসসি জয়

মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করে নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ অ্যাওয়ার্ড’ পাওয়া শারমিন আক্তার এসএসসি পাশ করেছেন।

পলাশ রায় ঝালকাঠি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2017, 10:41 AM
Updated : 4 May 2017, 02:04 PM

জোরপূর্বক বিয়ে ঠেকিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার কিশোরীদের জন্য দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করা শারমিন ঝালকাঠির রাজাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৪ দশমিক ৩২ পেয়ে পাস করেছেন।

ভবিষ্যতে আইনজীবী হয়ে নির্যাতিত ও অসহায় নারীদের পাশে দাঁড়াতে চান এ কিশোরী।

বৃহস্পতিবার ফল পাওয়ার অপেক্ষার সময় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয় তার।

শারমিন বলেন, “আমার এসএসসি পরীক্ষাই দেওয়া হত না যদি আমি মায়ের বিরুদ্ধে মামলা না করতাম। পরীক্ষার ফলাফল যা হোকনা কেন হাসি মুখে মেনে নেব।

“তবে আমার ওপর নির্যাতন নেমে না আসলে অনেক ভাল ফলাফল করতাম।”

অবশেষে ফলাফল হাতে আসে।মানবিক বিভাগ থেকে ৪ দশমিক ৩২ পেয়ে পাশ করেছেন শারমিন।

ফল পাওয়ার পর তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেক চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে আমি এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। এ ফলাফলেই আমি সন্তুষ্ট। তবে এখন থেকে আরও অনেক বেশি বেশি পড়াশোনা করব।

“আগামীতে একজন আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। আর আইনজীবী হয়ে দেশ ও দেশের নির্যাতিত নারীদের পাশে দাঁড়ানোই হবে আমার একমাত্র ব্রত।”

শারমিনের স্কুলের প্রধান শিক্ষক গাজী গোলাম মোস্তফা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় ২০১৫ সালের আগস্টের শুরুর দিকে ৩২ বছর বয়সী এক পাত্রের সঙ্গে সাথে শারমিনের বিয়ে ঠিক করে তার মা।বিয়েতে রাজী না হওয়ায় খুলনায় নিয়ে তাকে পাত্রের সঙ্গে আটকে রাখা হয়।

“পরে সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে রাজাপুরে আসার পরও মা আর সেই যুবকের নির্যাতন সহ্য করতে হয় তাকে। শেষে এক সহপাঠীর সহযোগিতায় রাজাপুর থানায় মা আর ওই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করে শারমিন।”

তখন থেকেই ওর পাশে আছি।এত নির্যাতন, এত ঝড়-বিপত্তির পর এ ফলাফল সত্যিই প্রশংসার, বলেন প্রধান শিক্ষক।

ফাইল ছবি

সাহসিকতার সঙ্গে নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে দেওয়া শারমিন আক্তারের হাতে গত ২৯ মার্চ ‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ’ পুরস্কার তুলে দেন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প।

শারমিনের সঙ্গে ওইদিন আরও ১২ জন নারীকে দেওয়া হয় এই পুরস্কার।