দুই মাস পর মাছ শিকারে নামছে জেলেরা

দুই মাস বন্ধ থাকার পর সোমবার থেকে নদীতে মাছ শিকারে নামছে জেলেরা।

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2017, 05:53 PM
Updated : 30 April 2017, 05:53 PM

ইলিশ অভয়াশ্রম কর্মসূচির আওতায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ ছিল।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুর রহমান জানান, ২০০৬ সাল থেকে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস চাঁদপুরের বিস্তীর্ণ নদীসীমাকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করে জাটকা রক্ষা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

ইলিশের পোনা (জাটকা) নিধন প্রতিরোধকল্পে চাঁদপুরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের চরআলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার নদীতে মার্চ-এপ্রিল এ দুই মাস ধরে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মৎস্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে চাঁদপুরের নদীসীমা হচ্ছে ৭০ কিলোমিটার।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য অফিস জানায়, দুই মাসে পদ্মা-মেঘনা নদীতে ৪৫০ এরও বেশি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে ১৯৪ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড, ৪১ জেলেকে ২ লাখ ১০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা, ১ লাখ ২৩ হাজার মিটার কারেন্ট জাল এবং ১৫ মেট্রিক টন জাটকা ও পাঙ্গাশের পোনা জব্দ করা হয়।

সফিকুর রহমান জানান, চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনায় মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত রয়েছে ৪১ হাজার ১৮৯ জন জেলে। অভয়াশ্রম সময়কালে এসব জেলেদের প্রতি পরিবারকে ৪০ কেজি করে ৪ মাস চাল দেওয়া হয়। এছাড়া এক হাজার জেলেকে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে রিকশা, ভ্যান, হাঁস-মুরগি ও সেলাই মেশিন প্রদান করা হয়।

চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর এলাকার জেলে হাবু ছৈয়াল, ইদ্রিস গাজী ও হারুন বেপারী বলেন, দুই মাস পদ্মা-নদীতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তারা কোনো ধরনের মাছ শিকার করতে পারেননি। এ সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে আমাদের খুব কষ্টে দিন কাটাতে হয়। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি জেলে পরিবারকে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ জেলেই ৩০ বা ৩৫ কেজি করে চাল পেয়েছে।

চাঁদপুর কান্ট্রি ফিশিং বোট মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম মল্লিক বলেন, ইলিশ অভয়াশ্রম কর্মসূচির আওতায় নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের নামকাওয়াস্তে সরকারিভাবে যেই পরিমাণ সহযোগিতা করা হয়, তা দিয়ে জেলেদের জীবন চলে না।

“জেলেদেরকে নদীতে মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে হলে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলেই সরকারি এই নিষেধাজ্ঞার সফলতা আসবে।”

এ ব্যাপারে সফিকুর রহমান বলেন, প্রতিবছরই স্বল্প সংখ্যক জেলের বিকল্প কর্মসংস্থান করা হয়। পুরো জেলেদের নিষিদ্ধ সময়ে বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।