সাভারে আটক ‘জঙ্গি’ কামরুল ‘৪ মাস আগে নিখোঁজ’ 

ঢাকার সাভারে জঙ্গি সন্দেহে আটক তিনজনের মধ্যে যশোরের কামরুল হাসান এ বছরের শুরুতে নিখোঁজ হয়েছিলেন বলে পরিবারের দাবি।

যশোর প্রতিনিধিসিকদার খালিদ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2017, 05:07 PM
Updated : 30 April 2017, 05:07 PM

কামরুলের মা শাহনাজ পারভীন ও ভাই আহসান হাবীব সুজন সাংবাদিকদের একথা জানান।

র‌্যাব জানায়, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বৃহস্পতিবার রাতে একটি বাসে তল্লাশি চালিয়ে পিস্তল, গুলি ও বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এরা হলেন তামিম দ্বারী, কামরুল হাসান ওরফে কাজল ওরফে নুরউদ্দিন ও মোস্তফা মজুমদার ওরফে শিহাব।

তারা জেএমবির ‘সরোয়ার-তামিম’ গ্রুপের সদস্য বলে র‌্যাব বলেছিল।

কামরুলের মা শাহনাজ পারভীন ও ভাই আহসান হাবীব সুজন জানান, গত ১৬ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা যশোরের খাজুরা বাজার থেকে কামরুল হাসান কাজলকে ঢাকার গাড়িতে তুলে দেন। সৌদি আরব যাওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি ঢাকায় যাচ্ছিলেন। রাত ২টা পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ছিল কামরুলের। রাত আড়াইটা থেকে তাকে আর মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।

এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। এরপর গত শুক্র ও শনিবার টেলিভিশনের খবরে ও সংবাদপত্রে তারা জঙ্গি হিসেবে কাজলকে আটকের খবর ও ছবি দেখতে পান বলে জানান।

আহসান হাবিব সুজন বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকমকে বলেন, ১৬ জানুয়ারি তার ভাই নিখোঁজ হওয়ার পর তারা কোথাও খুঁজে না পেয়ে আলফা লাইন পরিবহনের যে বাসে (ঢাকা মেট্রো-ব- ১৪-৮৮২২) তিনি ঢাকার উদ্দেশ্য যাত্রা করেছিলেন সেই বাসটি খুঁজে বের করেন।

“বাসের হেলপার জানান-ওই রাত আড়াইটার দিকে ঢাকার গাবতলীতে বাস থামলে সাধারণ পোশাকের একদল লোক পুলিশ পরিচয় দিয়ে বাসে ওঠে এবং কাজলকে নামিয়ে আরেকটি গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায়।”

১৯ জানুয়ারি তার মা এ ঘটনায় ঢাকার দারুস সালাম থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি নম্বর ৯৮৩) করেন। এরপর একাধিকবার তারা ওই থানা, ডিবি ও র‌্যাব দপ্তরে গিয়েও কামরুলের সন্ধান পাননি বলে সুজনের ভাষ্য।  

পরে ৩০ জানুয়ারি তারা যশোর কোতয়ালি থানায়ও একটি সাধারণ ডায়েরি বলেন বলে সুজন জানান।

পরিবারের সদস্যরা বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকমকে বলেন, কামরুল হাসান কাজলের বাড়ি যশোর সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের আজমতপুর গ্রামে। বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় তার বাবা কাইয়ুম হোসেন কিয়ামের সাজা হওয়ার পর তার মা তাদের তিন ভাইকে নিয়ে গ্রামে চলে আসেন ২০১১ সালে। এর আগে তারা থাকতেন খাগড়াছড়ির রামগড়ে। কাজল মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেছেন। গতবছর তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেন। সর্বশেষ তিনি সৌদি আরবে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। তার ভিসাও হয়েছিল। যাওয়ার চূড়ান্ত তারিখ জানার জন্য তিনি ঢাকায় গিয়েছিলেন, যেখান থেকে তিনি নিখোঁজ হন। 

লেবুতলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান মিলন বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকমকে বলেন, ৩/৪ মাস আগে আব্দুল কাইয়ুম তাকে জানান তার ছেলে কামরুল ঢাকায় গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন।

একই কথা বলেন, ওই ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রবিউল ইসলাম।

কামরুল হাসানের কাজলের প্রতিবেশী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিলন মিত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকমকে বলেন, “তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আছে আমরা ভাবতেই পারি না।”