লিটন হত্যা: কাদের খানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

গাইবান্ধার সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2017, 01:46 PM
Updated : 30 April 2017, 03:21 PM

ঘটনার চার মাসের মাথায় রোববার সন্ধ্যায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুন্দরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু হায়দার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ আমলী আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এ সময় আদালত পুলিশের পরিদর্শক জালাল উদ্দিন ও সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আতিয়ার রহমান উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগপত্রে একই আসনের (সুন্দরগঞ্জ) জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল কাদের খানসহ আটজনকে আসামি করা হয়েছে।

অন্য আসামিরা হলেন আনোয়ারুল ইসলাম রানা, শাহীন মিয়া, রাসেদুল ইসলাম ওরফে মেহেদী হাসান, কাদের খানের গাড়িচালক আব্দুল হান্নান, কাদের খানের ব্যক্তিগত সহকারী শামছুজ্জোহা সরকার, বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক (বহিষ্কৃত) চন্দন কুমার সরকার ও তার ভগ্নিপতি সোর্স সুবল চন্দ্র রায়।

তদন্ত কর্মকর্তা সুন্দরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু হায়দার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, আট আসামির মধ্যে আব্দুল কাদের খানসহ সাতজন লিটন হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে কারাগারে রয়েছেন। চন্দন কুমার সরকার পলাতক রয়েছেন।

পলাতক আসামি ভারতে রয়েছেন বলে খবর রয়েছে। ইন্টারপোলের সহায়তায় আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান আশরাফুজ্জামান।

মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন

অভিযোগপত্রের বরাত দিয়ে আশরাফুজ্জামান বলেন, ২০১৫ সালের শেষ দিকে এমপি লিটনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আব্দুল কাদের খান। লিটনকে সরিয়ে রাজনীতির পথ সুগম করতেই এমন চক্রান্ত করেন কাদের। বিভিন্ন দফায় ভাড়াটে খুনিদের ১০ লাখ টাকা দেন কাদের খান। হত্যাকাণ্ডে তিনটি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে দুটি অস্ত্র অবৈধ।

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জের নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় লিটনের বোন তাহমিদা বুলবুল বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ঘটনার এক মাস ২১ দিন পর বগুড়া শহরের কাদের খানের স্ত্রীর মালিকানাধীন গরীব শাহ ক্লিনিক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর কয়েক দফা তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। প্রথম রিমান্ডে থাকা অবস্থার চতুর্থ দিনের মাথায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে লিটন হত্যার দায় স্বীকার করেন আব্দুল কাদের খান।

আব্দুল কাদের খান গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি। তিনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপরহাটি ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপরহাটি (খানপাড়া) গ্রামের মৃত নয়ান খানের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে বগুড়া জেলা শহরের গরীব শাহ ক্লিনিকের চার তলা ভবনে বসবাস করতেন।