ইউপি ভোটের পর মনপুরায় ব্যবসায়ীদের উপর হামলা

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর ভোলার মনপুরায় আক্রান্ত হয়েছেন এক দল হিন্দু ব্যবসায়ী।

আহাদ চৌধুরী তুহিন ভোলা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2017, 01:20 PM
Updated : 30 April 2017, 01:21 PM

ভোটে জয়ী আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী সমর্থকরা এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

হামলায় আহত আটজনের মধ্যে তিনজনকে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন কলাতলীচর হিন্দু আবাসন কেন্দ্রের মিয়া জমিরশাহ বাজারে ব্যবসায়ীদের উপর হামলা হয়।

ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান আমানত উল্যাহ আলমগীরের সমর্থক মো. সুমনের নেতৃত্বে একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালায় বলে আক্রান্তদের অভিযোগ।

সুমনের নেতৃত্বে হামলার কথা জানিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদটির নতুন নির্বাচিত সদস্য মো. ছালাহউদ্দিনও।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সুমনসহ ৭/৮ জনের একটি সংঘবদ্ধ গ্রুপ হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা চালিয়ে দোকানপাট ভাংচুর করেছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।”

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আহত অলংঘ কুমার দাস (৬৫) বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সুমনের নেতৃত্বে মিলন, রূপক, সমির, রহিদাস ও রনজিতসহ কয়েকজন হামলার শুরুতে মিয়া বাজারের শ্রীমান চন্দ্র দাসকে তার দোকান থেকে তুলে নিয়ে যায়।

“খবর পেয়ে বাজারের সেক্রেটারি লক্ষণ চন্দ্র দাস এবং দীপক চন্দ্র দাস গেলে হামলাকারীরা বলে, ‘বাজারে নতুন চেয়ারম্যানের লোক ছাড়া কেউ ব্যবসা করতে পারবে না। শুধু অর্জুন এখানে কাঁকড়ার ব্যবসা করবে। অন্য কাউকে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না’।”

“একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা লক্ষণ চন্দ্রসহ হিন্দু ধর্মাবলম্বী অন্য ব্যবসায়ীদের উপর হামলা চালায়। লক্ষণ চন্দ্র (৪৫) এবং দীপক চন্দ্র দাস (৪০) সহ ৭/৮ জন আহত হন।”

অলংঘ, লক্ষণ চন্দ্র (৪৫) ও দীপক চন্দ্র দাস (৪০) মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে  ভর্তি রয়েছেন।

লক্ষণ চন্দ্র বলেন, হামলাকারীরা তার দোকান ভাংচুরের পর মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এতে এক লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।

ঘটনাস্থলের পাশের কলাতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক মো. আবু সাঈদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঘটনা শুনে তারা গেলেও হামলাকারী কাউকে পাননি।

“দোকানের মালামাল এলোমেলো অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি।ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

মনপুরা থানার ওসি মো. শাহিন খানও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনা শোনার পর কলাতলী তদন্ত কেন্দ্রের সদস্যদের সেখানে পাঠিয়েছিলাম। তারা সেখানে গিয়ে অভিযুক্ত কাউকে খুঁজে পায়নি।”

আক্রান্ত কেউ রোববার বিকাল পর্যন্ত কোনো মামলা করেনি বলে জানান তিনি।

অভিযোগের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ারম্যান আমানত উল্যাহর মোবাইলে অনেকবার কল করা হলেও ফোন ধরেননি তিনি।

গত ১৬ এপ্রিল মনপুরা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিজয়ী হন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমানত উল্যাহ।