মাগুরায় ধান কাটার শ্রমিকে হিমশিম চাষি

মাগুরায় বোরো ধান কাটার শ্রমিকের জন্য উচ্চ দৈনিক মজুরিসহ নানা সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চাষিদের।  

মাগুরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 April 2017, 03:37 PM
Updated : 29 April 2017, 03:37 PM

দিনে ছয়শ থেকে সাতশ টাকা পর্যন্ত হাজিরা (মজুরি) দিয়েও খাবারের তালিকায় রাখতে হবে ভালো পদ। অন্যান্য সুবিধার সঙ্গে বাড়িতে থাকতে হবে টেলিভিশন। রাতে শোবার জন্য অবশ্যই মশারী ও ফ্যান দিতে হবে।

সদর উপজেলার নান্দুয়ালী এলাকায় ধান কাটা শ্রমিকদের সঙ্গে গৃহস্থদের দরকষাকষি শুনে বিষয়টি পরিষ্কার হয়।

শার্শায় বোরো ক্ষেতে ধান কাটছে কৃষকরা

এখন বোরো ধান কাটার সময়। পুরো জেলায় মাঠে মাঠে পাকা ধান। আবহাওয়া খারাপ হয়ে যে কোনো সময় ঝড় বা ভারী বর্ষণ হতে পারে। তাই মাঠ থেকে ধান কেটে আনতে গৃহস্থরা তোড়জোড় শুরু করেছেন।

সদর উপজেলার শত্রুজিৎপুর এলাকার গৃহস্থ নাসির উদ্দিন, শালিখার আনসার উদ্দিন বলেন, ছয়শ টাকা দিয়ে জন (ধান কাটা শ্রমিখ) কিনেছেন। তবে তাদের তেলাপিয়া, সিলভার কার্প, পাঙ্গাস মাছ খেতে দিলে হবে না। চাহিদামতো বিড়ি সিগারেট ছাড়াও সন্ধ্যায় চা-নাস্তার ব্যবস্থা করতে হবে। রাতে টিভি দেখার ব্যবস্থা করতে হবে। সবচেয়ে জোরালো শর্ত হচ্ছে রাতে শোবার জন্য অব্যশই মশারী ও ফ্যান দিতে হবে।  

মাঠে পাকা ধান, আকাশে মেঘ; তাই শ্রমিকদের সব শর্ত মেনে নিতে হচ্ছে বলে জানান তারা।

তারা আক্ষেপ করে বলেন, এতকিছুর পরও ধানের মন সাতশ থেকে আটশ টাকা।

নাটোর, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা থেকে আসা করিম উদ্দিন, শাহিন, তুজাম, মোকলেছসহ একাধিক শ্রমিক বলেন, তারা অনেক টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে মাগুরায় এসেছেন। তাছাড়া প্রচণ্ড রোদে পানি-কাদার মধ্যে ধান কাটা অনেক কষ্টের। তাই তারা সাতশ টাকার কমে রাজি হচ্ছেন না।

তাদের কথা উঠে আসে, এখন মওকার সময়; ৬/৭শ টাকা দৈনিক মজুরি তো পাওয়াই যায়। অন্য সময় তো তিন থেকে চারশ টাকার বেশি পাওয়া যায় না।  

মাগুরা কৃষি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, মাগুরায় ধান প্রধান ফসল। এ বছর ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এ কারণে ভরা মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সরকার ভর্তুকি দিয়ে নানা কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করছে। আগামীতে এ সমস্যা দূর হবে।