ম্যাটস্ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা সেটেলমেন্ট অফিসারের

নোয়াখালীতে সেটেলমেন্ট অফিসের এক কর্মকর্তা চিকিৎসা সহকারী প্রশিক্ষণ বিদ্যালয়ের (ম্যাটস্) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে লাঠিপেটা করেছেন।

নোয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2017, 05:54 PM
Updated : 28 April 2017, 05:54 PM

ওই সময় ধারণ করা ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

মিজানুর রহমান নামের ওই ব্যক্তি নোয়াখালী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার।

নোয়াখালী ম্যাটস্’র ৩য় বর্ষের ছাত্র ও বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা মেডিকেল স্টুডেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি আরএইচ রিফাত জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে ম্যাটস্ শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূটিতে হামলা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকালে তারা শহরে মৌন মিছিল করেন।

রিফাত বলেন, এরপর জেলা প্রসাশকের কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি করার সময় পুলিশ বাধা দেয়। এরপর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে আসার পথে পুলিশ তাদেরকে লাঠিপেটা করে।

“এ সময় সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মিজানুর রহমান লাঠি নিয়ে ক্যাম্পাসের ভেতর প্রবেশ করে ছাত্রছাত্রীদেরকে ধেড়ক পিটিয়ে আহত করেন। হামলায় অন্তত ৩০ জন ছাত্রছাত্রী আহত হয়েছেন।”

জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ম্যাটস্ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।

“খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে বললে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানসহ সড়কে কয়েকটি অটোরিকশা ও পৌর পার্কের বাতি ভাংচুরও করেন।”

তিনি বলেন, এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করে পুলিশ। শিক্ষার্থীদের ছোড়া ইটের আঘাতে অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (ইনসার্ভিস) ছুফি উল্লার দেহরক্ষী আবেদ, গাড়িচালক আবু সালেহ ও সুধারাম থানার এএসআই সাইফুল আহত হন।

তাদেরকে পুলিশ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় বলে জানান জসিম উদ্দিন।

সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মিজানুর রহমান শিক্ষার্থীদেরকে লাঠিপেটার কথা স্বীকার করে বলেন, “জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কার্যালয়ের সামনে ছাত্রছাত্রীদের কয়েকজন আমার সাথে চরম দুর্ব্যবহার করে। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে আমি যা করার তাই করেছি।”

এ ব্যপারে পুলিশ সুপার ইলিয়াছ শরীফ বলেন, সত্যিই যদি এমন কিছু হয়ে থাকে তাহলে তা সম্পুন্ন বেআইনি। আইন হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারো নেই এবং কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

উচ্চ শিক্ষার সুযোগ প্রদান, সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিক ও বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে কাজ করার সুযোগ দেওয়াসহ চার দফা দাবিতে ম্যাটস্ শিক্ষার্থীরা গত কয়েকদিন থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে ম্যাটস্ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।

এরপর পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানসহ সড়কে কয়েকটি অটোরিকশা ও পৌর পার্কের বাতি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।