‘লিবিয়ায় আটকে দেশে টাকা আদায়’, ২ সহোদর গ্রেপ্তার

‘লিবিয়ায় দুই যুবককে আটকে রেখে’ বাংলাদেশে তাদের স্বজনদের থেকে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে দুই সহোদরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2017, 04:08 PM
Updated : 27 April 2017, 04:08 PM

বুধবার দুপুর থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ সদরে ফতুল্লার পাগলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এরা হলেন পাগলার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২২) ও তার ভাই হযরত আলী (৩৮)।

মানুষের কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসেবে আদায় করা পাঁচ লাখ ২০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এ ঘটনায় অপহৃত মেহেদী হাসান হৃদয়ের বাবা মিজানুর রহমান বাদী হয়ে গ্রেপ্তার হযরত আলী, সাইফুল ইসলাম এবং লিবিয়ায় অবস্থানকারী হারুন ও দুলাল হোসেনকে আসামি করে ফতুল্লা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, নরসিংদী জেলার মিজানুর রহমানের বড় ছেলে মেহেদী হাসান হৃদয় (২১) ও তার প্রতিবেশী সেলিমকে (৪০) ভালো চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ছয় মাস আগে আসামি হযরত আলী ও সাইফুল ইসলামের সহায়তায় লিবিয়ায় পাঠানো হয়।

আসামি হারুন ও দুলাল হোসেন লিবিয়ায় মেহেদী হাসান হৃদয় ও সেলিমকে আটকে রাখেন। এরপর গত ৫ এপ্রিল দুলাল হোসেন মেহেদী হাসানের মামা জুলহাস মিয়ার মোবাইল ফোনে ফোন করে বলেন- মেহেদী ও সেলিমকে দালালের কাছ থেকে তারা ক্রয় করেছেন। তাদের মুক্ত করতে হলে হলে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা করে তাদেরকে দিতে হবে।

ওই সময় আসামিরা মেহদী ও সেলিমকে শারীরিক নিযার্তন করা ছবি দেখায়।

দুলাল হোসেন এরপর হৃদয়ের মামা জুলহাসকে নারায়ণগঞ্জের পাগলা এলাকায় বসবাসকারী সাইফুল ইসলামের মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে মুক্তিপণের টাকা দিতে বলেন।

মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ২২ এপ্রিল হৃদয়ের বাবা ৩০ হাজার টাকা যোগাড় করে সাইফুল ইসলামের পাগলার বাড়িতে দিয়ে আসেন। কিন্তু ওইদিন রাত ১০টার দিকে সাইফুল ফোন করে বলেন- দুলাল তাকে জানিয়েছেন জনপ্রতি আরো ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা করে দিলে হৃদয় ও সেলিমকে মুক্তি দেওয়া হবে।

এরপর মেহেদীর বাবা বিষয়টি ফতুল্লা থানা পুলিশকে জানান।  

ফতুল্লা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহজালাল জানান, বুধবার দুপুরে আরও ২০ হাজার টাকা নিয়ে সাইফুল ইসলামের বাড়ি গিয়ে দেওয়ার সময় পুলিশ হাতেনাতে সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ওইদিন রাতে হযরত আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

সাইফুলের ভাই হারুন এবং হযরত আলীর ভাই দুলাল লিবিয়ায় অবস্থান করেন। তারা বিভিন্ন মানুষকে আটক রেখে নির্যাতন করে এদেশে স্বজনের কাছ থেকে ৩৩ লাখ টাকা আদায় করার কথা স্বীকার করেছেন বলে সাইফুল ও হযরত স্বীকার করেছেন, বলেন পরিদর্শ শাহজাহান।

তাদের কাছে মুক্তিপণ বাবদ বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে আদায় করা ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা পুলিশ উদ্ধার করেছে বলেও শাহজাহান জানান।