শিক্ষক শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে ঘুষের মামলায় অভিযোগপত্র

ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে কান ধরে উঠ-বস করানোর ঘটনায় সংবাদ শিরোনাম হওয়া নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে এবার ঘুষের মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2017, 06:40 PM
Updated : 26 April 2017, 07:07 PM

নারায়ণগঞ্জের আদালতের ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বন্দর থানার পরিদর্শক(তদন্ত) হারুন অর রশিদ গত ১৭ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন বলে জানিয়েছেন পাবলিক প্রসিকিউটর ওয়াজেদ আলী খোকন।

তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ জানান, আগামী ২৪ মে অভিযোগপত্র গ্রহণের বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। এই মামলায় ওই শিক্ষিকা মোর্শেদা বেগম, তার স্বামী আব্দুল গাফ্ফার, দুই বোন ও অভিভাবক কমিটির এক সদস্যকে সাক্ষী করা হয়েছে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত ইংরেজি শিক্ষক মোর্শেদা বেগমের চাকরি এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার জন্য তার কছে থেকে প্রথমে ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন।

পরে তার কাছ থেকে আরও এক লাখ টাকা নেন; কিন্তু মোর্শেদা বেগমকে এমপিওভুক্ত করার দরখাস্ত কোনো স্থানেই দেননি তিনি।

পরবর্তীতে এমপিওভুক্ত না হওয়ায় মোর্শেদা বেগম টাকা ফেরত চাইলে দিতে অস্বীকার করেন শ্যামল কান্তি।

এই ঘটনায় গত বছরের ২৭ জুলাই মোর্শেদা বেগম বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।

তবে শ্যামল কান্তি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন।

গত বছরের ১৩ মে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কল্যাণদীতে পিয়ার সাত্তার লফিত উচ্চ বিদ্যালয়ে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমানের নির্দেশে শারীরিক নির্যাতন ও কান ধরে উঠ-বস করানোর ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনার পর বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদ শ্যামলকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে।

সরকারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল থেকে স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমানকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি উঠলেও তিনি সংবাদ সম্মেলন করে সেটি নাকচ করে এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ ও লজ্জিত বললেও তিনি বলেন, শিক্ষককে নয়, নাস্তিককে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের ১৪ জুলাই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, শিক্ষার্থী রিফাতকে মারধর ও শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে পৃথক তিনজন বাদী নারায়ণগঞ্জ আদালতে তিনটি মামলার আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে প্রথম দুটি মামলা খারিজ করে দেয়।

পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক মোর্শেদা বেগমের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে বন্দর থানা পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।