উপজেলার শিবনগর-ত্রিমোহনী গ্রামের সাইদুর রহমান ওরফে জেন্টু বিশ্বাসের বাড়িতে জঙ্গিদের অবস্থানের খবর পেয়ে বুধবার ভোরে বাড়িটি ঘিরে ফেলা হয় বলে জেলার পুলিশ সুপার মুজাহিদুল ইসলাম জানান।
গোমস্তাপুর সার্কেলের এএসপি মাইনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঘেরাও করার পর ভেতর থেকে পুলিশের দিকে গুলি ছোড়া হয়। জবাবে পুলিশও গুলি করেছে।
“ওই বাড়িতে রফিকুল আলম আবু (৩০) নামে এক জঙ্গি ও তার স্ত্রী-সন্তানসহ চারজন থাকতে পারে বলে আমাদের কাছে প্রাথমিক তথ্য আছে। মাইকে তাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হচ্ছে। আশপাশের চারটি বাড়ির লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা থেকে কাউন্টার ট্রেররিজম ও সোয়াট সদস্যরা ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। তারা পৌঁছালে অভিযান শুরু হবে বলে এএসপি মাইনুল জানান।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার মহিবুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভোরে ওই বাসায় গেলে ভেতর থেকে গুলি ছোড়া হয়। সেখানে কী পরিমাণ বিস্ফোরক বা গোলাবারুদ আছে সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
এদিকে জননিরাপত্তার স্বার্থে শিবগনগর ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে বলে শিবগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।
ওই এলাকা থেকে মাঝে মাঝে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে দূর থেকেও। নিরাপত্তার কারণে সাংবাদিকদের কাছে যেতে দিচ্ছে না পুলিশ।
স্থানীয়রা বলছে, বাড়ির মালিক ৭৫ বছর বয়সী জেন্টু বিশ্বাস মাস তিনেক আগে একই এলাকার আফসার আলীর ছেলে আবুকে ভাড়া ছাড়াই ওই বাসায় থাকতে দেন। আবু স্থানীয় বাজরে মসলা বিক্রি করেন।
এর আগে বুধবার সকালেই কানসাট ইউনিয়নের আব্বাস বাজার এলাকার তিনটি বাড়ি ঘেরাও অভিযান চালালেও পুলিশ সেখানে জঙ্গিদের কাউকে পায়নি বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালানোর পর পুলিশ গত শুক্র ও শনিবার ঝিনাইদহের একটি বাড়ি ঘিরে অভিযান চালিয়ে ‘বিপুল বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম’ উদ্ধার করে।
এরপর মঙ্গলবার দিনভর রাজশাহীর একটি এলাকায় কয়েকটি বাড়ি ঘিরে ‘ব্লক রেইড’ চলে। তবে সেখানে কোনো জঙ্গি আস্তানার খোঁজ পায়নি পুলিশ।
কে এই আবু
আবু শিবগঞ্জ উপজেলারই চাচরা গ্রামের দিনমজুর আফসার আলীর ছেলে।
সকালে সাংবাদিকরা ওই গ্রামে গেলে আবুর মা গৃহিণী ফুলছানা বেগম বলেন, “আবু প্রায় নয় বছর আগে বিয়ের পর থেকে একই উপজেলার আব্বাস বাজারে শ্বশুরবাড়িতে থাকত। মাস তিনেক আগে জেন্টুর ওই বাড়িতে ওঠে।”
আবুর পেশা বা জীবন-যাপন সম্পর্কে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।
ছেলেবেলা আবু চাচরা গ্রামের মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন বলে জানালেও কোন শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি ফুলছানা।
তিনি জানান, আবু দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড়। বোনের বিয়ে হয়েছে। আর ছোট ভাই আবদুস সবুর রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। আবুর আট ও ছয় বছরের দুটি মেয়ে রয়েছে।