সোমবার ভোর রাতে এই হাওরের উড়াবন বাঁধ ভেঙে প্রায় ২২ হাজার একর বোরো ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাহেদুল হক।
আগের দিনই তাহিরপুর উপজেলার শনির হাওরের বাঁধ ভেঙে সমপরিমাণ জমির ফসল তলিয়ে যায়।
জাহেদুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে হাওরটি ঝুঁকির মধ্যে ছিল। পানি বেড়ে যাওয়ায় হাওরের বাঁধটি ভেঙে যায়।
হাওরটিতে প্রায় ৯ হাজার হেক্টর বোরো ফসল আবাদ হয়েছিল বলে জানান তিনি।
হাওরের কৃষক আলী আজম জানান, এ মাসের শুরু থেকেই হাওরের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পানি ঢুকতে শুরু করলে কৃষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছিলেন।
৪০ হাজার টাকা ধার করে বোরো চাষ করেছিলেন কৃষক আনসার মিয়া, তার কণ্ঠে ঝরে পড়লো হাহাকার।
আনসার বলেন, “আর কয়েক দিন হারওটি টিকে থাকলে ধান কাটা যেত। ভোর রাতে ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন কী করে ঋণের টাকা দিব আর কী করে বউ-বাচ্চাকে খাওয়াবো, বুঝতে পারছি না।”
এ মাসের শুরুতেই পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাওরের বিস্তীর্ণ এলাকার বোরো ধান তলিয়ে যায়। হাওরের বাঁধগুলো মেরামত ও নতুন করে নির্মাণে দুর্নীতির কারণেই এ ফসলহানি হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
গত দুই বছরে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে হাওরের ২৮টি বাঁধ নির্মাণের জন্য ১১৬টি প্যাকেজে দরপত্র আহ্বান করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী ও অন্যান্যরা ঠিকাদাররা যোগসাজশ করে কোনো কাজ না করেই দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
‘হাওর অ্যাডভোকেসি’ নামে একটি সংগঠন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক পরিসংখ্যান উল্লেখ করে জানায়, এবার সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জে এক লাখ ৭১ হাজার ১১৫ হেক্টর জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জেরই এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর ধানের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।