মাঠের পর এবার গ্রামেও ঢুকেছে পানি; ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সহস্রাধিক পরিবার; বাতিল করা হয়েছে কমপক্ষে দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা।
নেত্রকোনা
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান ইমাম জানান, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের সব কটিতেই কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। মোজাফরপুর ইউনিয়নের প্রায় ৮০ শতাংশ ফসল তলিয়ে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মুতাসিমুল ইসলাম বলেন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৬ মেট্রিকটন চাল ও এক লাখ টাকা ইতোমধ্যেই দেওয়া হয়েছে।
মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জুয়েল আহমদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ধলাই নদীর গোপালনগর ও করিমপুর গ্রামে আগেই ভাঙন দেখা দেয়। শনিবার ভারী বর্ষণে কোনাগাঁও এলাকা দিয়ে নতুন করে আরেকটি ভাঙন দেখা দিয়েছে।
“তিনটি ভাঙন দিয়ে আসা পানি কমলগঞ্জ-মৌলভীবাজার সড়কের গোপালনগর ও বাসুদেবপুর এলাকার সড়ক উপচে গ্রামাঞ্চল তলিয়ে যাচ্ছে। শমশেরনগর, মুন্সীবাজার, পতনঊষার ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রাম তলিয়ে গেছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাট ও বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় যাতায়াত ও গো-খাদ্য সংকটসহ চরম দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ।”
কমলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, পানিতে রাস্তাঘাট ও বিদ্যালয়ের আঙিনা নিমজ্জিত হওয়ায় করিমপুর ও বাসুদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।
কমলগঞ্জ পৌরসভা, কমলগঞ্জ ইউনিয়ন, মুন্সীবাজার ইউনিয়ন, পতনউষার ও শমশেরনগর ইউনিয়নের প্রায় দেড় হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবারের জন্য প্রাথমিকভাবে ২০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
“উপজেলা প্রশাসন সেদিকে সার্বক্ষণিক নজর রাখছে। বৃষ্টিপাত বন্ধ না হলে অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে।”
শনিবার থেকে এখানে টানা বৃষ্টি হচ্ছে।
তিন দিনের ভারি বর্ষণে জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলারও বিভিন্ন এলাকার সহস্রাধিক বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সবুজবাগ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা চিকিৎসক আশীষ চক্রবর্তী জানান, তার ঘরের ভেতরে প্রায় ৩ ফুট পানি উঠেছে।
শ্রীমঙ্গল শহরতলির সবুজবাগ, লালবাগ, রূপসপুর, সন্ধানী, শাহীবাগ, সুরভী পাড়া, মুসলিমবাগ, বিরামপুর, শাপলাবাগ, শান্তিবাগ, জেটিরোড, উত্তর ভাড়াউড়া, পশ্চিম ভাড়াউড়া এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে একই রকম ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান।
এলাকার চার-পাঁচটি পাহাড়ি ছড়ার দু পাড় দখল করে স্থাপনা তৈরি করায় ছড়ার নাব্যতা কমে যাওয়াকে এ বন্যার জন্য দায়ী করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ভানু লাল রায়।
শহরতলির ধানী জমিতে অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণকেও এর প্রধান কারণ বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা।
সরজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন রাস্তা সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। পিচ উঠে গেছে বিভিন্ন জায়গায়।