রমেল চাকমার মৃত্যু: রাঙামাটিতে অবরোধ

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ নেতা রমেল চাকমার মৃত্যুর প্রতিবাদে রাঙামাটিতে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ সড়ক ও নৌপথ অবরোধ পালিত হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2017, 01:58 PM
Updated : 23 April 2017, 05:03 PM

রোববার সকাল ৬টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টায় অবরোধ শেষ হয়। এ সময়ের মধ্যে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

রমেল চাকমা ইউপিডিএফ সমর্থিত ছাত্র সংগঠন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) নানিয়ারচর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

গত ৫ এপ্রিল জেলার নানিয়ারচর উপজেলা সদর থেকে তাকে আটক করে সেনাবাহিনী। পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করানো হয়। সেখানে ১৯ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়।

পিসিপি কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রোনাল চাকমার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পিসিপি’ ও ‘রমেল চাকমা হত্যা প্রতিবাদ কমিটি’ যৌথভাবে এই অবরোধ করেছে।

স্থানীয়রা জানান, রোববার সকাল থেকে রাঙামাটির বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং করেছেন অবরোধ সমর্থকরা। কোনো কোনো স্থানে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছ ফেলে তারা অবরোধ সৃষ্টি করেন তারা।  

সড়ক ও নৌপথে দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। জেলা শহর থেকে দূরপাল্লার ভারী যানবাহন ও লঞ্চ উপজেলার উদ্দেশে ছেড়ে যায়নি। অফিস আদালত খোলা থাকলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি ছিল কম বলেও স্থানীয়রা জানান।

পিসিপির অভিযোগ, কোনো প্রকার মামলা বা ওয়ারেন্ট ছাড়াই এইচএসসি পরীক্ষাথী রমেল চাকমাকে অন্যায়ভাবে আটক করে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তাবাহিনীর পরিচয় দিয়ে রমেল  চাকমার মরদেহ পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে সামাজিক-ধমীয় রীতিনীতি ছাড়াই এবং পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের অনুপস্থিতিতে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।

রমেলের মৃত্যুর বিষয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রাশিদুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, একটি ট্রাক পোড়ানো ও দুটি বাস লুটের মামলার আসাম রমেলকে গত ৫ এপ্রিল আটক করা হয়েছিল। সেদিনই তাকে নানিয়ারচর থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।

“পুলিশের হেফাজতেই সে চিকিৎসাধীন ছিল। সেনাবাহিনীর নির্যাতনে মৃত্যুর বিষয়টি ঠিক নয়, এটি ভিত্তিহীন অভিযোগ,” বলেন এই সেনা কর্মকর্তা।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশিদুল বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, নানিয়াচর থানা পুলিশ, কাউখালির ইউএনও, আত্মীয়স্বজন-বন্ধুবান্ধবের উপস্থিতিতে গত শুক্রবার দুপুর দেড়টা থেকে বিকাল ৪টার মধ্যে তাদের ধর্মীয় রীতি অনুসারে রমেলকে দাহ করা হয়।

রমেল চাকমা ‘হত্যায়’ জড়িতদের গ্রেপ্তার, নিহতের পরিবারকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান, অন্যায় ধরপাকড়-নির্যাতন বন্ধ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১১ নির্দেশনা বাতিলের দাবি জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। 

একই দাবিতে আগামী মঙ্গলবার রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের সামনে অবস্থান ধর্মঘট এবং ২৬ এপ্রিল নানিয়ারচর বাজার বয়কট কর্মসূচি পালন করা হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

রাঙামাটির পুলিশ সুপার সাঈদ মো. তারিকুল হাসান জানান, অবরোধে আইনশৃংখলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের অতিরিক্ত টহল জোরদার ছিল। ফলে অবরোধে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারেনি।