পাহাড়ে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত

খাগড়াছড়িতে এক বাঙালি যুবককে হত্যার প্রতিবাদে পাহাড়ে বসবাসরত কয়েকটি বাঙালি সংগঠনের ডাকে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে।

খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2017, 01:33 PM
Updated : 19 April 2017, 01:33 PM

বুধবার সকাল থেকে ১২ ঘণ্টার এ হরতালে দুই জেলায় অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার কোনো যান চলাচল করেনি। বিভিন্ন এলাকায় দোকানপাট বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। 

দুই জেলায় সকাল থেকে বিক্ষোভ পিকেটিং চলেছে। খাগড়াছড়িতে ট্রাক ভাংচুর, পুলিশের ধাওয়া ও লাঠিচার্জ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়।     

গত ১০ এপ্রিল সন্ধ্যায় দুই উপজাতি ছাদিকুল ইসলামের (২৩) মোটারসাইকেলে করে ভাড়ায়  মহালছড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে রাঙ্গামাটির ঘিলাছড়িতে যান। এরপর থেকে ছাদিকুলের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

রাঙামাটির নানিয়াচর উপজেলার ঘিলাছড়িতে ১৩ এপ্রিল বিকালে মাটি চাপা দেওয়া অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

সাদিকুলের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, পার্বত্য চট্টগ্রামের সব হত্যাকাণ্ডের বিচার ও ভূমি বন্দোবস্ত চালুর দাবি এবং ‘পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের’ অব্যাহত চাঁদাবাজির প্রতিবাদে পার্বত্য গণপরিষদ ও পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ এ হরতালের ডাক দেয়।  

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, সকাল সোয়া ৭টার দিকে শুরু হওয়া হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে সন্ধ্যা ৬টার দিকে শেষ হয়।

দাবি মেনে না নেওয়া হলে আন্দোলনে যাবেন বলে খাগড়াছড়ি বাঙালি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা হুঁশিয়ারি জানলেও শেষ পর্যন্ত নতুন কোনো কর্মসূচির ঘোষণা আসেনি।    

এর আগে হরতালের সমর্থনে জেলা সদরের উন্নয়ন বোর্ড সড়কের সামনে পিকেটাররা একটি ট্রাক ভাংচুর করলে পুলিশ ধাওয়া করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় তিন পিকেটারকে আটক করা হলেও পরে তাদের ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি তারেক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান জানান, “শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। কোথাও কোথাও পিকেটিং হলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।”

হরতালের মধ্যে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো পুলিশের পাহারায় শহরে প্রবেশ করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা শহর ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ ছিল বলে জানান তিনি।

রাঙামাটি প্রতিনিধি জানান, হরতালে জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সকল যান চলাচল এবং দোকানপাট বন্ধ ছিল। সরকারি অফিস, আদালত, ব্যাংক-বীমা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও লোকজনের উপস্থিতি দেখা যায়নি।

রাঙামাটি হরতাল চিত্র

কোতোয়ালি থানার ওসি মুহাম্মদ রশীদ জানান, হরতালের সমর্থনে সকালে শহরে বিক্ষিপ্ত মিছিল বের করেন হরতালকারীরা। শহরের রিজার্ভবাজার, পৌরচত্বর, বনরূপাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পিকেটিং করে তারা।

তবে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শহরের মূল পয়েন্টগুলোতে আইন শৃংঙ্খলাবাহিনীর টহল জোরদার  ছিল বলে জানান তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন এ হরতালের সমর্থন দেয় বলে পার্বত্য গণপরিষদের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান পারভেজ তালুকদার জানান।