ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে শিক্ষক ও দপ্তরি আটক

শরীয়তপুরে শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও দপ্তরিকে আটক করেছে পুলিশ; যাদের বিরুদ্ধে আরও কয়েকজন ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে।

শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2017, 03:11 PM
Updated : 18 April 2017, 03:11 PM

আটকরা হলেন- সদর উপজেলার বিনোদপুর ঢালী কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম কাউসার ও বিদ্যালয়ের দপ্তরি জাহিদুল ইসলাম।

বিদ্যালয় থেকে মঙ্গলবার তাদের আটক করা হয় বলে পালং মডেল থানার ওসি খলিলুর রহমান জানান।

শিক্ষার্থী ও অবিভাবকদের বরাত দিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “কাউসার ও জাহিদুল বিভিন্ন সময় স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের লাইব্রেরিতে ডেকে নিয়ে ‘কৌশলে শ্লীলতাহানির’ চেষ্টা করতেন।

পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দোওয়ার ভয়ে কোনো শিক্ষার্থী বিষয়টি তাদের অবিভাবকদের জানায়নি বলে জানান ওসি।    

“গত ১ ও ৩ এপ্রিল বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির দুই ছাত্রী কাউসার ও জাহিদুলের শ্লীলতাহানির শিকার হয়। পরে ১৬ এপ্রিল তাদের অভিভাবকরা এ ঘটনা জানতে পারেন।”

ওসি জানান, এ ঘটনায় ওই ছাত্রীদের অভিভাবকরা ১৭ এপ্রিল শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বরাবর একটি লিখিত আবেদন করার পর তিনি উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকতা ফারুক হোসেনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

মঙ্গলবার স্কুলের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ কাউসার ও জাহিদুল ইসলাম আটক করে, বলেন ওসি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পঞ্চম শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, প্রধান শিক্ষক তাদেরকে কক্ষে ডেকে নিয়ে মোবাইলে বিভিন্ন খারাপ ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে জোর করে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। অভিভাবকদের না জানানোর জন্য বিভিন্ন হুমকি দিতেন।  

শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, প্রধান শিক্ষক একেক দিন পঞ্চম শ্রেণির একেক ছাত্রীকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে মোবাইলে পর্ণ ছবি ও ভিডিও দেখাতেন।  

কোনো ছাত্রী তাদের অভিভাবকদের জানাতে চাইলে উপ-বৃত্তির টাকা না দেওয়া, পরীক্ষায় ফেল করানোসহ বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হতো বলে অভিযোগ করেন তিনি।

স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে বলে ওসি জানালেও অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক কাউসার বলেন, “স্থানীয় দুই বখাটে বিদ্যালয়ে ঢুকে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীদেরকে উত্ত্যক্ত করত। এ ঘটনার বিচার করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়েছে।”

ছাত্রীদেরকে ‘শ্লীলতাহানি’ করেননি বলেও দাবি করেন তিনি।

দপ্তরি জাহিদুল ইসলাম বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ষড়ষন্ত্র করছে। বিষয়টি আপনারা তদন্ত করে দেখেন।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।