দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে বাগানের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা দেওয়া হয়।
১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর তাদের দোসর রাজাকারদের সহায়তায় এই দিনে তারাপুর চা বাগান ও সিলেট ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই লিমিটেডের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা বৈকুন্ট চন্দ্র গুপ্তের পরিবারের পাঁচজন সদস্য, বাগানের চিকিৎসক, স্টাফ্, শ্রমিকসহ ৩৯ জনকে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী।
১৯৯০ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি করে প্রতারণার মাধ্যমে তারাপুর চা-বাগানের ৪২২ দশমিক ৯৬ একর দেবোত্তর সম্পত্তি দখল করে নেন রাগীব আলী। এরপর থেকে এখানে দিবসটি পালিত হয়নি।
এই চা-বাগানের বন্দোবস্ত নিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক (চিঠি) জালিয়াতির মামলায় গত ২ ফেব্রুয়ারি রাগীব আলী ও তার ছেলেকে চারটি ধারায় মোট ১৪ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
গত ৬ এপ্রিল প্রতারণার মাধ্যমে তারাপুর চা-বাগানের ভূমি আত্মসাতের মামলায় রাগীব আলী, তার ছেলে ও মেয়েসহ পাঁচজনের সাজা হয়। এর মধ্যে ৮৩ বছর বয়সী রাগীব আলীর চারটি ধারায় মোট ১৪ বছর কারাদণ্ড হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রথমে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এ সময় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সিলেট মহানগর ইউনিট কমান্ড, ডা. পংকজ গুপ্ত ও শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ, মদনমোহন কলেজ অধ্যক্ষ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেট, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, খেলাঘরসহ বাগানের চা-শ্রমিক ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পরপর স্মৃতিস্তম্ভের পাশে আলোচনা সভা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান হয়। তারাপুর চা-বাগানের সেবায়েত ও শহীদ পরিবারের সদস্য পংকজ গুপ্ত এতে সভাপতিত্ব করেন।
সিলেটের সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্তের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মহানগর ইউনিট কমান্ডার ভবতোষ রায় বর্মণ রানা, ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল খালিক, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বিজিৎ চৌধুরী, রাজনীতিবিদ কংগ্রেজ বাদল কর, প্রবীণ সাংবাদিক বশির আহমেদ, সাংবাদিক সুকেশ চন্দ্র দেব, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সভাপতি আমিরুল ইসলাম চৌধুরী ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ইলিয়াছুর রহমান।
অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হয়ে চা বাগানের শহীদ চিকিৎসক ক্ষিতীশ চন্দ্র দে এর সহধর্মিনী ৯৪ বছরের নিভা রানী দে তার স্বামীর পক্ষে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন।