হাওরের মানুষ বাঁচাতে সরকারকে উদ্যোগ নিতেই হবে: রাষ্ট্রপতি

আকস্মিক ঢলে ফসল হারানো হাওর এলাকার মানুষকে বাঁচাতে সরকারকে উদ্যোগী হতে বলেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2017, 06:52 PM
Updated : 17 April 2017, 06:53 PM

হাওর এলাকার মানুষ আবদুল হামিদ সোমবার জলমগ্ন এলাকা দেখার পর রাতে সুনামগঞ্জে এক মতবিনিময় সভায় একথা বলেন।

হাওরের বোরো ফসল রক্ষায় নদী খননের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “প্রতি বছর হাওর এলাকায় বন্যা হইত না যদি নদীর গভীরতা না কমত। সুনামগঞ্জের পাহাড়ের পানির উৎসমুখ থেকে ভৈরব পর্যন্ত ক্যাপিটাল ড্রেজিং করতে হবে।

“এর জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন, কিন্তু হাওর এলাকার মানুষকে বাঁচাতে সরকারকে উদ্যোগ নিতেই হবে।”

জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাসনরাজা মিলানয়াতনে জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রতিনিধি এবং জেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা এই সভায় ছিলেন।

আবদুল হামিদ বলেন, “একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধের দুর্যোগের সময় কেউ আমাকে টেনে এখানে আনে নাই, আমি এসেছিলাম। তখন দুর্যোগের সময় আমি ছিলাম, আজকেও দুর্যোগের সময় আমি আছি। তখন জয়ী হয়েছিলাম, এবারের আসাও নিরর্থক হবে না, কিছু একটা আশা করা যায়।”

আগামী সংসদের অধিবেশন বসলে হাওর এলাকার সব সাংসদকে সমস্বরে সমস্যার কথা বলার পরামর্শ দেন সাবেক স্পিকার আবদুল হামিদ।

হাওরের মানুষদের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানান রাষ্ট্রপ্রধান।

“হাওরের পয়েন্টে পয়েন্টে ইকোনমিক জোন করার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে করেছি। আমরা হাওরের বাসিন্দা বলেই বিভিন্ন বিষয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।”

সভায় স্বভাবসুলভ রসিকতা করে আবদুল হামিদ বলেন, “দেশের সব ক্ষমতা মহিলাদের হাতে। প্রধানমন্ত্রী মহিলা, স্পিকার মহিলা, বিরোধীদলীয় নেত্রীও মহিলা। শুধু আমরা রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি পুরুষ।”

জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলামের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সাংসদ মুহিবুর রহমান মানিক, জয়া সেন গুপ্তা, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, শামছুন নাহার বেগম, পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার নাজমান আর খানম, ডিআইজি কামরুল আহসান, পুলিশ সুপার বরকত উল্লাহ খান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট, পৌর মেয়র আয়ূব বখত প্রমুখ।

সভায় বক্তারা ফসলহানির সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন।

হাওরের বিলগুলো এক বছরের জন্য লিজ বাতিল করে কৃষকদের মাছ ধরার সুযোগ করে দেওয়া, কৃষি ঋণ মওকুফ, হাওরের স্কুলগুলোতে বেতন না নেয়ার দাবি জানান তারা।