বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে দুইটি মাইক্রোবাস ও একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় তারা কারাগারে আসেন। রাত সাড়ে ৮টায় তারা কারাগার থেকে বের হয়ে যান।
বাবা আবু ইউসুফ, মা আজিজুন্নেসাসহ ২৭ জন নারী, পুরুষ ও শিশু এসছেন এখানে।
ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তিনজনকে হত্যার এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন হলেন শীর্ষ হুজি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান, তার দুই সহযোগী শরীফ শাহেদুল বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপন।
তাদের মধ্যে রিপন আছেন সিলেট কারাগারে এবং হান্নান ও বিপুল রয়েছেন কাশিমপুর কারাগারে।
“সন্ধ্যায় শেষ দেখা করতে রিপনের স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে।”
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরের পরে কারাগারে রিপনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তার বাবা আবু ইউসুফ, মা আজিজুন্নেছা, ভাই নাজমুল ইসলাম ও নাজমুলের স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান। এসময় তারা প্রায় ২৫ মিনিট অবস্থান করেন সেখানে।
ছগির মিয়া জানান, মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রপতির কাছে রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হয়। সেই চিঠি পৌঁছেছে কারাগারে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারা কর্তৃপক্ষ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠি হাতে পায়।
“চিঠি পাওয়ার পর আমরা আসামিকে প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার খবর জানিয়েছি। দণ্ড কার্যকরে আমরা প্রস্তত আছি। উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত ও সব প্রক্রিয়া শেষ হলেই ফাঁসি কার্যকর করা হবে।”
রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদনের সিদ্ধান্ত জানার আগে গত রোববার রিপনের ১২ জন আত্মীয় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে দেখা করেন।
সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ২০০৪ সালের ২১ মে ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী গ্রেনেড হামলার মুখে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই পুলিশের এএসআই কামাল উদ্দিন নিহত হন।
এছাড়া পুলিশ কনস্টেবল রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তি মারা যান হাসপাতালে। আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৪০ জন ওই ঘটনায় আহত হন।
ওই ঘটনায় করা মামলার চূড়ান্ত রায়ে আপিল বিভাগ গত বছরের ৭ ডিসেম্বর তিন আসামির সর্বোচ্চ সাজার রায় বহাল রাখে।
এ মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডিত দুই আসামি মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে হাই কোর্ট যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল। আপিল না করায় তাদের ওই সাজাই বহাল থাকে।
আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন। তাদের আবেদন গত ১৯ মার্চ সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে যায়। ফলে চূড়ান্ত বিচারেও ফাঁসির রায় বহাল থাকে।