রিপনের ফাঁসির প্রস্তুতি সম্পন্ন, স্বজনদের ডাকা হয়েছে

রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার পর জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসি কার্যকরের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সিলেট কারা কর্তৃপক্ষ। ‘শেষ’ সাক্ষাৎ করতে বুধবার সন্ধ্যায় তার স্বজনদের ডাকা হয়েছে।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 April 2017, 09:48 AM
Updated : 12 April 2017, 01:23 PM

ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তিনজনকে হত্যার এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুজন হলেন হুজি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল বিপুল। তাদের প্রাণভিক্ষার আবেদনও নাকচ হয়ে গেছে। তারা আছেন কাশিমপুর কারাগারে।

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ছগির মিয়া জানান, ফাঁসি কার্যকরে সব প্রস্তুতি শেষ। প্রধান জল্লাদ ফারুকের নেতৃত্বে চার জন জল্লাদ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তাদের সহযোগী হিসেবে থাকবে আরও ছয় জন।

“সন্ধ্যায় শেষ দেখা করতে রিপনের স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে।”

আনোয়ার চৌধুরী

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরের পরে কারাগারে রিপনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তার বাবা আবু ইউসুফ, মা আজিজুন্নেছা, ভাই নাজমুল ইসলাম ও নাজমুলের স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান। এসময় তারা প্রায় ২৫ মিনিট অবস্থান করেন সেখানে।

ছগির মিয়া জানান, মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রপতির কাছে রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হয়। সেই চিঠি পৌঁছেছে কারাগারে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারা কর্তৃপক্ষ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠি হাতে পায়।

“চিঠি পাওয়ার পর আমরা আসামিকে প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার খবর জানিয়েছি। দণ্ড কার্যকরে আমরা প্রস্তত আছি। উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত ও সব প্রক্রিয়া শেষ হলেই ফাঁসি কার্যকর করা হবে।”

ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তিনজনকে হত্যার মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ায় অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কৃপা প্রার্থনাই ছিল এই জঙ্গির প্রাণ বাঁচানোর শেষ সুযোগ।

রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদনের সিদ্ধান্ত জানার আগে গত রোববার রিপনের ১২ জন আত্মীয় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে দেখা করেন।

হামলায় আহত কয়েকজন

হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান

সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ২০০৪ সালের ২১ মে ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী গ্রেনেড হামলার মুখে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই পুলিশের এএসআই কামাল উদ্দিন নিহত হন।

এছাড়া পুলিশ কনস্টেবল রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তি মারা যান হাসপাতালে। আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৪০ জন ওই ঘটনায় আহত হন।

ওই ঘটনায় করা মামলার চূড়ান্ত রায়ে আপিল বিভাগ গত বছরের ৭ ডিসেম্বর তিন আসামির সর্বোচ্চ সাজার রায় বহাল রাখে।

এ মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডিত দুই আসামি মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে হাই কোর্ট যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল। আপিল না করায় তাদের ওই সাজাই বহাল থাকে।

আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন। তাদের আবেদন গত ১৯ মার্চ সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে যায়। ফলে চূড়ান্ত বিচারেও ফাঁসির রায় বহাল থাকে।