সিলেটে জঙ্গি রিপনের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ

রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করার পর সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপনের সঙ্গে দেখা করেছেন তার স্বজনরা।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 April 2017, 05:52 AM
Updated : 10 April 2017, 05:53 AM

জ্যেষ্ঠ কারাগার সুপার ছগির মিয়া জানান, ১২ জন আত্মীয়-স্বজন রোববার রিপনের সঙ্গে দেখা করেন। রিপনের চাচা, চাচি, খালাত ভাই ও ফুপাত বোনসহ তাদের শিশুসন্তানরা ২৫ মিনিট কথা বলেন।

হরকাতুল জিহাদের শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নান, তার সহযোগী রিপন ও শরীফ শাহেদুল বিপুলের মৃত্যুদণ্ডের রায় হলে তারা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন।

সেই আবেদন নাকচ হয়েছে বলে রোববার সাংবাদিকদের জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া তিন আসামির মধ্যে হান্নান ও শরীফকে রাখা হয়েছে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে।

রিপনের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কুমারগাঁওয়ে। 

সিলেট কারাগার কর্মকর্তা ছগির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাষ্ট্রপতি জঙ্গি রিপনের প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নাকচ করেছেন বলে আমরাও শুনেছি। এ বিষয়ে কোনো কাগজপত্র এখনও আমাদের কাছে আসেনি।

কাগজপত্র পাওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

তবে নাকচ হওয়ার খবর গণমাধ্যমের বরাতে রিপনকে জানানো হয়েছে বলে কারাগারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, রিপনকে কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। ফাঁসির আদেশ পাওয়ার পরপরই যাতে কার্যকর করা যায় সেদিকে লক্ষ রেখে ফাঁসির মঞ্চ ও ৮-১০ জন জল্লাদ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

রিপন নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তার মধ্যে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি।

সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ২০০৪ সালের ২১ মে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। এতে তিনজন মারা যান। আহত হন ৭০ জন।

ওই দিনই কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। তদন্ত শেষে হান্নানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

আদালত ৫৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর হান্নান, শরীফ ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। আর হান্নানের ভাই মহিবুল্লাহ ও মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ ওরফে খাজাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।

রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের আপিল ও মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের আবেদন শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের বেঞ্চ নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে।
পরে আসামিপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৭ ডিসেম্বর নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে আপিল বিভাগ।

সবশেষে রাষ্ট্রপতির প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড ছাড়া তাদের সামনে আর কোনো পথ নেই। কর্তৃপক্ষ যেকোনো সময় ফাঁসির আদেশ কার্যকর করতে পারে।