শাবিতে ২ সাংবাদিককে পিটিয়েছে ‘ছাত্রলীগ’

ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা সদ্য এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের ঘটনায় সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের দুই সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মীর বিরুদ্ধে।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2017, 03:04 AM
Updated : 9 April 2017, 06:18 AM

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শনিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনায় ওই ছাত্রী ও তার স্বজনরা প্রক্টরিয়াল বডি বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন।

আহতরা হলেন ডেইলি অবজারভারের সিলেট প্রতিনিধি সরদার আব্বাস ও দৈনিক সকালের খবরের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সৈয়দ নবীউল আলম দিপু। তাদেরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সরদার আব্বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং সৈয়দ নবীউল আলম দিপু প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি।

তবে এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা ছাত্রলীগ অস্বীকার করেছে।

প্রক্টর মুনশী নাসের ইবনে আফজাল বলেন, “যৌন হয়রানির শিকার পাঠানটুলা দ্বিপাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সদ্য এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া এক ছাত্রীর কাছ থেকে অভিাযোগ পেয়েছি। ঘটনা তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ছাত্রীটির অভিযোগ থেকে জানা যায়, শনিবার বিকালে তিনি ও তার ফুফাত ভাই ক্যাম্পাসে ঘুরতে এষে তার পিছু নিয়ে শহীদ মিনার পর্যন্ত আসেন ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী।

ওই কিশোরী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না জানার পর তারা ‘আজেবাজে’ প্রশ্ন করে এবং মুখে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়েন। এতে বাধা দিলে উত্ত্যক্তকারীদের একজন তাকে চড় মারেন এবং ফুফাতো ভাইকে মারধর করেন। আর কোনোদিন ক্যাম্পাসে এলে প্রাণনাশের হুমকিও দেয় বলে অভিযোগে বলা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক আব্দুলল্লাহ আল মনসুর বলেন, ঘটনাটি শুনে কয়েকজন সংবাদকর্মী এর সত্যতা জানতে চাইলে উত্ত্যক্তকারী ওই শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে ছাত্রলীগকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থের অনুসারী পরিচয় দেয়। ওই ছাত্রলীগকর্মীরা তাদেরও প্রাণনাশের হুমকি দেন।

“ছাত্রীকে মারধরকারী ও হুমকি প্রদানকারীরা হলেন সমাজকর্ম বিভাগের ২য় বর্ষ ১ম সেমিস্টারের মাহমুদুল হাসান রুদ্র এবং পরিসংখ্যান বিভাগের সাজ্জাদ রিয়াদ।”

মনসুর বলেন, সন্ধ্যা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ফুডকোর্টে চা খেতে গেলে দেশি অস্ত্র হয়ে তাদের উপর হামলা চালান ‘ছাত্রলীগ সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীরা’।

“হামলায় অংশ নেন লোকপ্রশাসন বিভাগের অনিরুদ্ধ দেব রায় অমিয়, নৃবিজ্ঞান বিভাগের রাহাত সিদ্দীকি, গণিত বিভাগের নজরুল ইসলাম রাকিবসহ আরও বেশ কয়েকজন।”

মারধরের শিকার সরদার আব্বাস ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারান এবং সৈয়দ নবীউল আলম দীপু গুরুতর আহত হন বলে জানান মনসুর।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ বলেন, “তাদেরকে (সাংবাদিকদের) গণধোলাই দেওয়া হয়েছে। তবে যারা দিয়েছে তারা ছাত্রলীগের কর্মী না। তারা সাধারণ শিক্ষার্থী। সাংবাদিকদের সাথে একটি ব্যাচের শিক্ষার্থীর ঝামেলা হয়েছে।”

“যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারে তারা আমার কর্মী তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

জালালাবাদ থানার ওসি আকতার হোসেন বলেন, ক্যাম্পাসের কয়েকজন ‘বখাটে বহিরাগত’ এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করলে সাংবাদিকরা বিষয়টি জানতে যান। এসময় ওই ‘বখাটে’ তাদের ওপর হামলা করে।”

“আমরা আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদানের জন্য ভর্তি করেছি। পরবর্তীতে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।