গাজীপুরে হত্যার দায়ে ৩ জনের ফাঁসির রায়

গাজীপুরে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 April 2017, 07:07 AM
Updated : 6 April 2017, 09:47 AM

গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম এনামুল হক বৃহস্পতিবার আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানার জামতৈল গ্রামের মো. আব্দুস ছামাদ মাস্টারের ছেলে মো. রেজাউল কারিম ওরফে সাগর, জামালপুর সদরের মোহনপুর গ্রামের সলিম উদ্দিনের ছেলে মো. জামাল উদ্দিন ও মৌলভীবাজার সদরের বেকামোড়া গ্রামের মো. ইয়াবর মিয়ার ছেলে মো. শাহাবুদ্দিন।

যাবজ্জীবন সাজার আদেশ পাওয়া সানজিদা আক্তার লিপি (৩০) মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাগরের স্ত্রী।

রায়ে ফাঁসির আসামিদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডও দিয়েছেন বিচারক। আর যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত লিপিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রিয়াদ নামের এক ব্যক্তিকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগে ২০১৩ সালে ২৩ জুলাই এ মামলা দায়ের করা হয় বলে গাজীপুর আদালত পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম জানান।

মামলার বিবরণে বলা হয়, গাজীপুরের টঙ্গীর চেরাগআলীর বাসিন্দা রিয়াদ ঢাকার উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছিলেন। উত্তরার হাউজ বিল্ডিং এলাকার এসএম মাতুল কোচিং সেন্টারে পড়ার সময় লিপির সঙ্গে রিয়াদের ‘প্রেমের সম্পর্ক’ গড়ে ওঠে। লিপি বিবাহিত ছিলেন।    

কিছুদিন পর চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২০১৩ সালে ২৩ জুলাই লিপি তার স্বামী সাগরের কাছে রিয়াদকে নিয়ে গেলে তাকে অপরহরণ করে জামালপুর নিয়ে যাওয়া হয়।

এরপর ২৭ জুলাই আবুধাবিতে বিয়াদের বাবাকে ফোন করে ৩০ লাখ টাকা দাবি করেন সাগর। পরদিন আবার ফোন করে  দাবি করেন পাঁচ লাখ টাকা।

এ ঘটনায় রিয়াদের মামতো ভাই অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট জাকির হোসেন ৩০ জুলাই টঙ্গী থানায় অপহরণের মামলা করেন।  

পরে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে সাগরসহ তিন আসামিকে জামালপুর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা রিয়াদকে হত্যার কথা স্বীকার করেন বলে মামলার নথিতে জানানো হয়।

এদিকে তার আগেই জামালপুরে রিয়াদের লাশ উদ্ধারের পর আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করে পুলিশ। মৃত্যুর ৩৬ দিন পর ওই বছর ৬ সপ্টেম্বর কবর থেকে লাশ তুলে মায়নাতদন্ত হয়।

তদন্ত শেষ প্রথমে টঙ্গী থানা পুলিশ এবং পরে গোয়েন্দা পুলিশ চার আসামির বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করলে এ মামলার বিচার কাজ শুরু হয়।