আ. লীগ নেতাকে ‘না জানিয়ে’ কমিটি, প্রধান শিক্ষককে মারধর

রাজশাহীর দুর্গাপুরে আওয়ামী লীগ নেতাকে ‘না জানিয়ে’ ম্যানেজিং কমিটির তালিকা করায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ তিনজনকে পিটিয়ে আহত করেছে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা ও তার লোকজন।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 April 2017, 11:54 AM
Updated : 5 April 2017, 12:51 PM

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কালীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনার সময় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ সরদার ও তার লোকজন অফিস কক্ষও ভাংচুর করে বলে জানান পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল গফুর শাহ।

এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেনকে (৫৫) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তাছাড়া সহকারী শিক্ষক (শরীর চর্চা) সাইফুল ইসলাম (৪০) ও পরিচালনা কমিটির সভাপতির ছেলে রবিউল ইসলামকে (৪২) উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

প্রধান শিক্ষক বলেন, কয়েকদিন আগে বিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য শিক্ষা বোর্ডে তালিকা পাঠানো হয়। আব্দুল মজিদকে না জানিয়ে ওই তালিকা কেন বোর্ডে পাঠানো হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে লোকজন নিয়ে স্কুলে এসে শার্টের কলার ধরে আমাকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে বের করেন।

“এ সময় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাইফুল ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির ছেলে রবিউল ইসলাম বাধা দিলে মজিদ পিস্তল বের করে তাদের সরে যেতে বলেন এবং এক পর্যায়ে লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে আমাকে পেটান।”

তাকে বাঁচাতে যাওয়ার সহকারী শিক্ষক সাইফুল ও রবিউলকে মারধর করা হয় বলে জানান তিনি।

আব্দুল গফুর শাহ বলেন, “বিদ্যালয়ে ক্লাস চলার সময় মজিদ লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়ে অফিস কক্ষ ভাংচুর ও প্রধান শিক্ষককে মারধর করেন।

“এ সময় প্রধান শিক্ষককে বাঁচাতে গেলে আমার ছেলেকে ছুরিকাঘাত করা হয়।”

দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দেওয়ান নাজমুল আলম বলেন, আহতদের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের অবস্থা গুরুতর। তার ডান চোখের নিচে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করার কারণে ফুলে রক্ত জমাট বেঁধেছে।

“এছাড়া তার ডান কানের পর্দা ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর রবিউলের বাম হাতের আঙুলে চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে।

রবিউল ও সাইফুল উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে দুর্গাপুর থানার ওসি রুহুল আলম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ সময় মজিদ ও তার লোকজন সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায় পুলিশ।

স্কুলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য আব্দুল মজিদের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।