ময়মনসিংহে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তারদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা

ময়মনসিংহ শহরের কালীবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন সাত জঙ্গির মধ্যে একজন ছাত্রলীগ নেতা, যিনি সব সময় এলাকাতেই থাকতেন বলে তার পরিবার দাবি করেছে।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 April 2017, 08:20 AM
Updated : 5 April 2017, 08:46 AM

গ্রেপ্তার আল-আমিন ধোবাউড়া উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি।

সোমবার দুপুরে কালীবাড়ি এলাকায় সোহাগ পার্টি সেন্টারের বিপরীতে একতলা একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আল-আমিনসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আল-আমিনের বাবা দিঘিরপাড় গ্রামের ইকবাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ছেলে কখনোই জঙ্গি হতে পারে না। সে সব সময়ই বাড়িতে অবস্থান করেছে।

“আল-আমিন কখনোই বাড়ি থেকে দূরে কোথাও যায়নি। এমনকি আমার অপরিচিত কোনো লোকের সাথেও তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের সব অনুষ্ঠানেই সে উপস্থিত ছিল।”

আল-আমিন চার ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়।

ইকবাল হোসেন বলেন, তার ছেলেমেয়েরা সবাই স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করেছেন। আল-আমিন স্থানীয় মুন্সীরহাট হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করার সময় পৈতৃক সার-বীজের ব্যবসায় সহযোগিতা শুরু করেন। বছর তিনেক আগে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ধোবাউড়া কেন্দ্রে ভর্তিও হয়েছিলেন। ‘ব্যবসায় ব্যস্ততার কারণে’ পরীক্ষা দেননি।

“গত ২৭ মার্চ আল-আমিন বন্ধুর কাছ থেকে মোটরবাইক বিক্রির পাওনা টাকা আনার জন্য ময়মনসিংহে যায়। সেখানে তাকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়। আমি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না।”

তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।

ধোবাউড়া থানার ওসি শওকত আলম বলেন, আল-আমিন গ্রামের বাড়িতে বাবার সঙ্গে ব্যবসায় জড়িত এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিষয়টি বিস্তারিত তদন্ত করা হচ্ছে।

এদিকে আল-আমিন জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়ার খবরে ধোবাউড়া আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনে চলছে তোলপাড়।

বাঘবেড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ হোসেন মিলন বলেন, আল-আমিন এক বছর ধরে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

“তিনি জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়ায় আমরা শুধু অবাক না, হতবাক হয়েছি। তার পরিবার আওয়ামী লীগ ঘরনার বলে এলাকায় সুপরিচিত। তার চাচা মোফাখকারুল ইসলাম ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক; বর্তমানে যুবলীগকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার জেঠাত ভাই জাকির হোসেন রিয়াদ বর্তমান ছাত্রলীগের একই কমিটির সভাপতি।”

আল-আমিন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সব ধরনের সভা-সমাবেশে অংশ নেন বলে জানান এই ছাত্রলীগ নেতা।

তিনি বলেন, “সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত হওয়ার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

“আল-আমিনের পরিবার শুধু না, তার আত্মীয়-স্বজন সবাই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সাথে জড়িত। সে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়ায় আমরা বিস্মিত হয়েছি,” বললেন ধোবাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক।