‘হজ থেকে ফিরে বদলে যান’ ময়মনসিংহের রতন

ময়মনসিংহের কালীবাড়ি থেকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার সাত জনের মধ্যে শহীদুল ইসলাম রতন নামে একজন হজ করার পর বদলে যান বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 April 2017, 06:01 AM
Updated : 5 April 2017, 06:01 AM

জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার বিলডোরা ইউনিয়নের দায়রাকান্দা গ্রামের মারফত আলীর ছেলে ৩৫ বছর বয়সী রতনের কোনো পেশাগত পরিচয় নেই।

অপরদিকে গ্রেপ্তার আশিকুর রহমান হৃদয়ের (১৯) পরিবার মনে করছে, রতনই তাদের ছেলেকে ‘বিপথগামী’ করেছেন।

সোমবার দুপুরে শহরের কালীবাড়ি এলাকায় সোহাগ পার্টি সেন্টারের বিপরীতে একতলা একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এই দুইজনসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার রতনের স্ত্রী আসমা খাতুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সপ্তাহে বৃহস্পতি ও শুক্রবার- এই দুই দিন বাড়ি থাকতেন তার স্বামী। বাকি পাঁচ দিন কোথায় যেতেন, কী করতেন তা তারা কেউ জানেন না।

“বছর তিনেক আগে আইনজীবী মুরাদের সাথে হজ করতে গিয়ে ফিরে আসার পর থেকেই তিনি ইসলামের পথে বেশি করে মন দেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। যারা নামাজ পড়ে না তাদের মুসলমান হিসেবে ঘৃণা করতেন। স্থানীয় মসজিদে বয়ান করাসহ ইসলামিক দাওয়াত দিতেন। কোরআন শরিফ আর ইসলামিক বই পড়তেন। বাড়ির বাইরের লোকজনের সাথে চলাফেরা কম করতেন।”

আসমা জানান, বছর দশেক আগে রতন বিবিএ পাস করার পর তাদের বিয়ে হয়। তাদের ছয় বছরের একটি মেয়ে ও দেড় বছরের ছেলে রয়েছে।

দুই ভাইবোনের মধ্যে রতন বড়। তার বোন বিয়ের পর থেকে ঢাকায় শ্বশুরবাড়িতেই থাকেন।

রতনের বাবা মারফত আলী বলেন, “আমি আমার মাছের খামার ও চাষাবাদ নিয়ে ব্যস্ত থাকি। ১৭ বিঘা মাছের খামার আর ধানি জমি আছে কিছু। ছেলে হজ থেকে ফিরে ধর্মের দিকে ঝুঁকল। সে জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিচার হোক।”

দায়রাকান্দা গ্রামের আলমগীর হোসেনসহ অনেকে বলেন, মাস খানেক আগে বাড়ি থেকে টাকা না নিয়েও নতুন মোটরসাইকেল কেনেন রতন। এরপর থেকে তার চলাফেরা ‘আরও সন্দেহজনক’ হয়ে ওঠে।

এদিকে রতনই আশিকুরকে ‘বিপথগামী’ করেছেন বলে মনে করছে আশিকুরের পরিবার।

আশিকুরের এক বোন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আশিকুর বনগ্রাম দাখিল মাদ্রাসা থেকে এসএসসি পাস করে ফুলপুর ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়। পরে বিদেশ যাওয়ার জন্য ড্রাইভিং শিখতে ময়মনসিংহ শহরে যান বলে আমরা জানি। রতনের সাথে থেকে থেকে হয়ত আমার ভাইও বিপথগামী হয়েছে।”

আশিকুরের বাবা ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে  একটি ফিলিং স্টেশনে চাকরি করেন। তার তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে আশিকুর সবার বড়।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূরে আলম জানান, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বুধবার সাতজনকেই আদালতে তোলা হতে পারে।