বিএনপি করি বলেই আমাকে বারবার বরখাস্ত: আরিফুল

বিএনপিতে যুক্ত বলেই বারবার মামলায় জড়িয়ে বরখাস্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

মঞ্জুর আহমদ সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 April 2017, 03:25 PM
Updated : 3 April 2017, 07:01 PM

দ্বিতীয় দফায় বরখাস্তের আদেশ স্থগিতের আদেশ সোমবার পাওয়ার পর এই প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।

২০১৩ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার দুই বছর পর ফৌজদারি একটি মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি হলে আরিফুলকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

ওই আদেশের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে পক্ষে রায় নিয়ে রোববার মেয়রের চেয়ারে বসার পরপরই অন্য একটি মামলার দেখিয়ে তাকে ফের বরখাস্ত করা হয়। সোমবার তাতে স্থগিতাদেশ নেন তিনি।

আরিফুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সংসদ সদস্যরা কোনো মামলার আসামি হলে তাদের বরখাস্ত করা হয় না। কিন্তু স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরা মিথ্যা মামলায় জামিনে থাকলেও বরখাস্ত করা হয়।এক দেশে দুই আইনে কেন?

“বিএনপি করি বলেই আমাকে বারবার মামলায় জড়িয়ে বরখাস্ত করা হচ্ছে।”

আরিফুলের পাশাপাশি রাজশাহী সিটি মেয়র বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলও রোববার চেয়ারে বসার পরক্ষণেই বরখাস্ত হন। একই দিনে বরখাস্ত হন হবিগঞ্জে বিএনপি থেকে নির্বাচিত মেয়র জি কে গউছ।

খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র বিএনপি নেতা মনিরুজ্জামান মনিও বরখাস্তের তালিকায় রয়েছেন। গাজীপুরে একই অবস্থা বিএনপি থেকে মেয়র নির্বাচিত হওয়া এম এ মান্নানের।

তবে কুমিল্লা ও বরিশালের মেয়র দুই বিএনপি নেতা আহসান হাবীব কামাল ও মনিরুল হক সাক্কু তাদের দায়িত্ব পালন করে যেতে পারছেন আওয়ামী লীগের শাসনামলে।

আরিফুল বলেন, “বরখাস্ত করা হলেও আমি মেয়র। জনগণের ভোটে নির্বাচিত মেয়র। মন্ত্রণালয় আমার দপ্তর কেড়ে নিয়েছে। জনগণের ভোট তো কেড়ে নিতে পারবে না। তাই আমি এখন দপ্তরবিহীন মেয়র।”

জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে ‘মিথ্যা মামলা’ দিয়ে আসামি করে বরখাস্ত করাকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য অশনি সংকেত বলেও মন্তব্য করেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি আরিফুল।

তিনি বলেন, “মাত্র একটি বছর কাজ করার পর থেকেই আমার উপর শুরু হল ষড়যন্ত্র। সেই ভয়াল, ঘৃন্য ষড়যন্ত্র। আমার উপর যে একের পর এক অন্যায়-অবিচার করা হচ্ছে। এ সব সম্পর্কে আমার প্রিয় নগরবাসী অবগত আছেন।”

মন্ত্রণালয়ের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথাও জানান আরিফুল।

ঘটনাক্রম

# ১৫ জুন, ২০১৩: সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আরিফুল হক চৌধুরী

# ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৪: সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় হবিগঞ্জের একটি আদালত আরিফুলকে কারাগারে পাঠায়।

# ৭ জানুয়ারি, ২০১৫: স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে সিলেটের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।

# ৪ জানুয়ারি, ২০১৭: কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে সাময়িক বরখাস্ত আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন আরিফুল।

# ১২ মার্চ, ২০১৭: বরখাস্তের আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে হাই কোর্ট।

# ২ এপ্রিল, ২০১৭: সর্বোচ্চ আদালতের রায় নিয়ে মেয়রের দায়িত্বে ফেরার তিন ঘণ্টার মাথায় তাকে ফের বরখাস্ত করে সরকার।

# সুনামগঞ্জে ২০০৪ সালের ২১ জুন আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় বোমা হামলার ঘটনায় করা এক মামলায় গত বছর কারাবন্দি আরিফুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ওই মামলায় পুলিশ সম্পূরক অভিযোগপত্র দিলে তাতে আরিফুলের নাম যোগ করা হয়।