রাউধার মৃত্যু: ময়নাতদন্তে আত্মহত্যার উল্লেখ, সন্দেহ পরিবারের

মালদ্বীপের মডেল কন্যা মেডিকেল ছাত্রী রাউধা আথিফ ফাঁসিতে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে ময়নাতদন্তে বলা হলেও তাতে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পরিবারের সদস্যরা।

বদরুল হাসান লিটন রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 April 2017, 02:44 PM
Updated : 1 April 2017, 02:44 PM

তবে মৌখিকভাবে সন্দেহের কথা বললেও তারা লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) আমির জাফর।

গত বুধবার দুপুরে রাজশাহী ইসলামি ব্যাংক মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালের ছাত্রী হোস্টেলে নিজের কক্ষে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান সহপাঠীরা।

শনিবার বিকালে রাউধার লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেন্সিক বিভাগ থেকে পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে।  

আমির জাফর জানান, ময়নাতদন্তসহ সকল প্রক্রিয়া নিয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত, দূতাবাসের প্রতিনিধি দল এবং রাউধার বাবা-মার সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, পুলিশ পৌঁছার আগে লাশ নামানোয় প্রশ্ন তুলেছেন রাউধার চিকিৎসক বাবা মোহাম্মাদ আথিফ। এছাড়া রাউধা আত্মহত্যা করতে পারেন বলে তার বাবা-মা বিশ্বাস করতে পারছেন না।

লাশ উদ্ধারের আগের রাত বাংলাদেশ সময় ১১টার দিকে সর্বশেষ রাউধার সঙ্গে তার বাবার কথা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন, বলেন আমির জাফর।

তিনি বলেন, রাউধার মৃত্যু নিয়ে কোনো সন্দেহ থাকলে তাদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা লিখিত কোনো অভিযোগ দেননি।

“তারা অভিযোগ না দিলেও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।”

প্রাথমিক তদন্তের বরাত দিয়ে আমির জাফর বলেন, ছাত্রী হোস্টেলের দ্বিতীয় তলার উত্তর পাশের ব্লকে রাউধাসহ ছয়জন বিদেশি ছাত্রী থাকতেন। রাউধা একাই থাকতেন ২০৯ নম্বর কক্ষে। অপর পাঁচ ছাত্রী থাকেন তিনটি কক্ষে।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে রাউধার সাড়া-শব্দ না পেয়ে তাকে ডাকতে যান সহপাঠীরা। জানালা দিয়ে তারা দেখতে পান রাউধার দেহ সিলিং ফ্যানে ঝুলছে। তারাই তাকে সেখান থেকে নামিয়ে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক ডেকে আনেন। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণার পর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

পুলিশ যাওয়ার আগে কেন রাউধার লাশ নামানো হলো, তাতেই সন্দেহ তার বাবা-মার। পুলিশও সে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

ময়নাতদন্ত বোর্ডের সদস্য এনামুল হক বলেন, রাউধার গলায় কাপড় পেঁচানোর দাগ ছাড়া শরীরের অন্য কোথাও কোনো দাগ পাওয়া যায়নি। গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে যাওয়ার করণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

মালদ্বীপের মালের ‘নীল নয়না’ মডেল তারকা রাউধা ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। গত বছরের ২২ অক্টোবর ভারতের ভোগ সাময়িকীর প্রচ্ছদে মডেল তারকাদের সঙ্গে ছবি ছাপা হয় রাউধার।