প্রাণভিক্ষা চাইলেন মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গি

ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তিনজনকে হত্যার মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গিনেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও তার দুই সহযোগী দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছেন।

সিলেট প্রতিনিধিগাজীপুর ওবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2017, 03:19 PM
Updated : 27 March 2017, 03:19 PM

হরকাতুল জিহাদের শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল বিপুলকে রাখা হয়েছে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে। আর আরেক জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপন আছেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে।

সোমবার তারা তিনজনই কারা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রাণভিক্ষার লিখিত আবেদন জমা দেন। 

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়ক মো. ছগির মিয়া বলেন, “সোমবার বেলা ১২টার দিকে রিপন প্রাণভিক্ষার লিখিত আবেদন করেছেন। আমরা তা পাঠিয়ে দিয়েছি।”   

আর মুফতি হান্নান ও বিপুল সন্ধ্যায় প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন বলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার মো. মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

কারাবন্দিদের ক্ষমার আবেদন কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে যায় আইন মন্ত্রণালয়ে। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে তা রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে যায়।

এই আবেদন রাষ্ট্রপতি নাকচ করে দিলে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকবে না; তার প্রস্তুতি রয়েছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে জানিয়েছে।

হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান

দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপন

সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ২০০৪ সালের ২১ মে ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী গ্রেনেড হামলার মুখে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই পুলিশের এএসআই কামাল উদ্দিন নিহত হন।

এছাড়া পুলিশ কনস্টেবল রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তি মারা যান হাসপাতালে। আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৪০ জন ওই ঘটনায় আহত হন।

ওই ঘটনায় করা মামলার চূড়ান্ত রায়ে আপিল বিভাগ গত বছরের ৭ ডিসেম্বর তিন আসামির সর্বোচ্চ সাজার রায় বহাল রাখে।

এ মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডিত দুই আসামি মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে হাই কোর্ট যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল। আপিল না করায় তাদের ওই সাজাই বহাল থাকে।

আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন। তাদের আবেদন গত ১৯ মার্চ সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে যায়। ফলে চূড়ান্ত বিচারেও ফাঁসির রায় বহাল থাকে।

প্রাণভিক্ষার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে সরকার কারাবিধি অনুযায়ী তাদের দণ্ড কার্যকর করবে।

সরকারের নির্দেশনা পেলে দণ্ড কার্যকরের সব প্রস্তুতি রয়েছে বলে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন ইতোমধ্যে জানিয়েছেন।