বঙ্গোপসাগরে ‘বেড়েছে’ জলদস্যুতা, আটক ১৩

কক্সবাজারে বঙ্গোপসাগরে ডাকাতি হওয়া ট্রলারসহ ১৩ জলদস্যুকে আটক করেছে কোস্টগার্ড; উদ্ধার করা হয়েছে মুক্তিপণের দাবিতে জিম্মি করা সাত জেলেসহ অস্ত্রশস্ত্র।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2017, 04:40 AM
Updated : 27 March 2017, 11:47 AM

কোস্টগার্ড পূর্ব জোনের গণমাধ্যম কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. ওমর ফারুক জানান, রোববার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে কুতুবদিয়া-মাতারবাড়ী চ্যানেলের ২৬ কিলোমিটার দূরে সাগরে এ অভিযান চালানো হয়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, দস্যুরা এফবি সজীব নামের একটি ট্রলার ছিনতাই করে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় তাদের ধাওয়া দিয়ে ১৩ জনকে আটকসহ সাত জিম্মিকে উদ্ধার করা হয়। আটক দস্যুরা জিম্মিদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করেছিল।

‘দস্যুদের কাছ থেকে দেশে তৈরি তিনটি বন্দুক, ২০ রাউন্ড গুলি, ১০টি চাপাতি, ১০টি মোবাইল ফোন ও ছয় হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।”

সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুতা বৃদ্ধির অভিযোগ তুলেছেন ফিশিং বোট মালিক সমিতির নেতারা।

কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ বলেন, “সম্প্রতি সাগরে জলদস্যুতা আশংকাজনক হারে বেড়ে গেছে। গত এক সপ্তাহে শতাধিক ট্রলারে ডাকাতি হয়েছে।

“এখনও ২০ থেকে ৩০ জন জেলেকে মুক্তিপণের জন্য সাগরে জিম্মি করে রাখা হয়েছে।”

কক্সবাজার শহরের বদরমোকাম এলাকার রফিকুল হুদা চৌধুরীর ট্রলার এফবি আরিয়ান ছিনতাই হয় শনিবার সকালে।

এই ট্রলারের জেলে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার হওয়া মোহাম্মদ রফিক বলেন, “আমরা ১৭ জেলে সাগরে মাছ ধরার সময় রোববার সকালে অস্ত্রের মুখে জলদস্যুরা জিম্মি করে ফেলে। একপর্যায়ে মারধর করে।

“তারা আমাদের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। ট্রলার মালিককে ফোন করে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। পরে কোস্টগার্ড অভিযান চালিয়ে আমাদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত করে।”

 

এফবি সজীবের জেলে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার হওয়া মোহাম্মদ সোহাগ বলেন, “বিকালে আমরা সাগরে মাছ ধরছিলাম। একপর্যায়ে জলদস্যুরা অস্ত্রের মুখে আমাদের ট্রলার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আমাদের ১২ জেলেকে অন্য ট্রলারে তুলে দিয়ে পাঁচজনকে মুক্তিপণের দাবিতে জিম্মি করে নিয়ে যায়।”

আটক ১৩ জন হলেন - চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া এলাকার আলী আহমদের ছেলে মো. নিজাম উদ্দিন ভাণ্ডারী, ওবায়দুল হকের ছেলে রবিউল আলম, আব্দুল হাকিমের ছেলে কামাল উদ্দিন, আব্দুল গনির ছেলে মহিউদ্দিন, শমশের আলমের ছেলে রেজাউল আজিম, আলী হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ হেলাল, আবুল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ কামাল, মধুখালীর মোহাম্মদ দরিজ্জামানের ছেলে মোহাম্মদ আনোয়ার ও কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী এলাকার শাহ আলমের ছেলে আব্দুল খালেক, টৈট্যং ইউনিয়নের নাপিতখালী এলাকার মোহাম্মদ সোহেল, আবুল হোসেনের ছেলে মো. আমির হোসেন, শমশের আলমের ছেলে মোহাম্মদ সরওয়ার ও চট্টগ্রামের জলাউ এলাকার মধুখালীর মোহাম্মদ রাজু।

তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন কোস্টগার্ড কর্মকর্তা ওমর ফারুক।