রাজশাহীতে প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগ আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) এক প্রকৌশলীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহীর এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2017, 12:35 PM
Updated : 22 March 2017, 12:44 PM

এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে বিএমডিএ-এর বাগমারা জোনের সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বাগমারা থানায় জিডি করেছেন বলে ওসি নাছিম আহম্মেদ জানিয়েছেন।

এছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত আবেদন করেছেন বলে রেজাউল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান। 

রেজাউল করিম বাগমারা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিরুল ইসলাম সান্টুর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন।

সান্টু বাগমারা উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি। রেজাউল একই কমিটির সদস্য সচিব।

অভিযোগে বলা হয, গত বছরের ২৭ মার্চ বাগমারার তেলিপুকুর গ্রামের মনছুর রহমান তার সেচ পাম্প ১৫ অশ্বশক্তি থেকে বাড়িয়ে ৩০ অশ্বশক্তিতে পরিবর্তনের আবেদন করেন। কিন্তু রেজাউল তা করতে অপারগতা জানান।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সান্টু ওই আবেদন নিয়ে রেজাউলকে তার চেম্বারে ডেকে পাঠান। রেজাউল সেখানে গেলে তাকে সেচ পাম্পের অশ্বশক্তি পরিবতর্নের ‘অনুমোদন’ দিতে বলেন সান্টু।

এতে আবারও অপারগতা জানালে চেয়ারম্যান সান্টু তাকে ‘গালাগাল’ ও ‘চড়-থাপ্পড়’ মারেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

রেজাউল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চেয়ারম্যানের হাতে ‘শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত’ হওযার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় রাজশাহী মেডিকলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন।

‘নিরাপত্তাহীনতার’ কারণে বুধবার তিনি অফিসে যাননি বলে জানান রেজাউল।

রেজাউলের ভাষ্য, সেচ পাম্পের অশ্বশক্তি বৃদ্ধির অনুমতি দেওয়ার আগে প্রয়োজনীয় অশ্বশক্তি আছে কিনা এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ বিভাগের ছাড়পত্র লাগে। কিন্ত ওই ছাড়পত্র ছাড়াই অশ্বশক্তি বৃদ্ধির অনুমোদন দেওয়ার জন্য তার ওপর ‘চাপ সৃষ্টি’ করা হচ্ছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সান্টু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রেজাউল করিমকে ধমক দিয়ে চেম্বার থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করে বৈঠক ডাকতে বলা হয়েছে।

মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “মাঠে কৃষকের ধান পুড়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন কৃষকরা তার দপ্তরের গিয়ে তাকে পায় না।”

“সেচ কমিটি অনুমোদন দেওয়ার পর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি সেচ পাম্পের অশ্বশক্তি বৃদ্ধি করে দেয়। এ বিষয়গুলো নিয়ে রেজাউল করিমকে একাধিকবার বৈঠক ডাকতে নির্দেশ দিলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। গত সমন্বয় সভায়ও তিনি উপস্থিত ছিলেন না।”  

একটি মহলের মদদে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলেও দাবি করেন সান্টু।

বাগমারা থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ বলেন, বিএমডিএ-এর প্রকৌশলীর অভিযোগ তদন্ত ও তার নিরাপত্তার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।