আগামী নির্বাচনই আমার শেষ নির্বাচন: এরশাদ

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, আগামী নির্বাচন তার শেষ নির্বাচন তাই সরকার গঠন করতে চান।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2017, 02:02 PM
Updated : 19 March 2017, 02:57 PM

শনিবার বিকালে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে মহানগর জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

এরশাদ বলেন, “বয়স হয়েছে অনেক। আগামী নির্বাচনই আমার শেষ নির্বাচন। এ নির্বাচনে রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসন পেলে আমরা ক্ষমতার মসনদে চলে যাব। এটাই শেষ সুযোগ। আমাদের সরকার গঠন করতেই হবে।

“একটি কথা আছে ভারতের উত্তর প্রদেশ যার দিল্লীর মসনদ তার। আর আমি বলি উত্তরবঙ্গ যার ঢাকার মসনদ তার। এ জন্য রংপুর বিভাগের ৩২টি আসনেই বিজয়ী হতে হবে।”

নতুন জোট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন জানিয়েছে জাতীয় পার্টির প্রধান বলেন, “ইতোমধ্যে ৩৫টি দল আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এরমধ্যে ছয়টি নিবন্ধিত দল রয়েছে। অনেকগুলো ইসলামী দল রয়েছে।

“এই দলগুলো মনে করে জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করতে পারলে এবং জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে সরকার গঠন হলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। মায়ের চোখের পানি আর পড়বে না। মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে।”

তিনি বলেন, “৯০ সালে আমি ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার পর আমাকে কারাগারে পাঠানো হলো। আমার পরিবারের ওপর নির্যাতন চালানো হলো। এরপর ৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা পেলাম ৩৩টি আসন। আর জামায়াত পেল ৩টি।

“আমি তখন কারাগারে। বিএনপি আমার কাছে দূত পাঠালো। আমাকে বলা হলো সরকার গঠনে আমি যদি সমর্থন দেই তাহলে যা চাইব বিএনপি তাই দেবে। আমি সমর্থন দেইনি।”

এ কারণে অনেক নির্যাতন-অত্যাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এরশাদ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ উপদেষ্টা বলেন, “৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের সমর্থন নিয়ে ২১ বছর পর ক্ষমতার মসনদে বসল আওয়ামী লীগ। কিন্তু কী পেলাম?

“আমার দলকে ভাগ করা হলো। আমার এমপিদের কিনে নেওয়া হলো। আমার ওপর অত্যাচার করা হলো। কিছুই পেলাম না।”

এরশাদ বলেন, “আর কাউকে সমর্থন নয়। এবার আমার দলের নেতৃত্বে জোট গঠন করে নির্বাচন করা হবে।” 

তিনি বলেন, “আমার লজ্জা ছিল, দুঃখ ছিল রংপুরে জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির সম্মেলন করতে পারিনি। অথচ আমি দেশের ৪২টি জেলার সম্মেলন করেছি। আজ মহানগর জাতীয় পার্টির সম্মেলন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে সে লজ্জা ও দুঃখ দূর হলো”।    

সম্মেলনে রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির নতুন কমিটির সভাপতি হিসেবে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এস এম ইয়াসিরের নাম ঘোষণা করে সকলের মতামত চান এরশাদ। নেতা-কর্মীরা হাত তুলে এরশাদের ঘোষণাকে সমর্থন জানান। একই সঙ্গে এরশাদ রংপুর সিটি করপোরেশেনের আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী হিসেবে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নামও ঘোষণা করেন।   

মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, শাহানারা বেগম, প্রেসিডিয়াম সদস্য চলচ্চিত্র অভিনেতা সোহেল রানা, খালেদ আকতার, ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ফখর উজ জামান জাহাঙ্গীর, ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন মাস্টার, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম ইয়াসির, রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ প্রমুখ।