সীমান্তের ওপারে আনসার সদস্য নিহত, লাশ পেল বিজিবি

ফেনীর ফুলগাজী সীমান্তে ভারতের বদরপুরে ‘মাদক ব্যবসায়ীদের’ হামলায় নিহত আনসার সদস্য মীর নওশাদ আলীর লাশ ফেরত দিয়েছে বিএসএফ।

নাজমুল হক শামীম ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2017, 02:52 PM
Updated : 9 March 2017, 02:52 PM

বৃহস্পতিবার বিকালে বদরপুর সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ লাশটি বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। এরপর বিজিবি লাশটি পুলিশকে দেয়।  

বুধবার রাতে ফুলগাজী উপজেলার মুন্সিরহাট হাট ইউনিয়ন সংলগ্ন সীমান্তবর্তী ভারতের বদরপুরে মাদকবিরোধী অভিযান চলাকালে ‘মাদক ব্যবসায়ীদের’ হামলায় আনসার সদস্য মীর নওশাদ আলী (৫২) নিহত হন। তার অস্ত্রও কেড়ে নেওয়া হয়।  

ওই সময় হামলাকারীরা অভিযানকারী দলের সঙ্গে থাকা পুলিশের কথিত সোর্স সুমনকে তারা অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসন জানায়।

আনসার ও ভিডিপির উপ-মহাপরিচলেক দিলীপ কুমার বৃহস্পতিবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ফেনীর ৪ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর এম আশরাফ আলী জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সীমান্তের বদরপুর অংশে বিজিবি ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর  (বিএসএফ) পতাকা বৈঠক হয়। পতাকা বৈঠক শেষে বিএসএফ ৮৬ ব্যাটালিয়নের কোম্পানি অধিনায়ক সুরেন্দ্র কুমার নিহত মীর নওশাদ আলীর লাশ হস্তান্তর করেন।

বিজিবি লাশ গ্রহণ করে ফুলগাজী থানা পুলিশে হস্তান্তর করেছে বলে জানান মেজর আশরাফ।

মেজর আশরাফ আরও জানান, বিএসএফের হাতে আটক বাংলাদেশি যুবক সুমনকে বিএসএফ সদস্যরা ফেরত দেয়নি। ‘অবৈধ অনুপ্রবেশ’, আনসার সদস্য ‘নিহত’ ও ‘অস্ত্র জব্দের’ ঘটনায় ওই দেশের সীমান্তবর্তী থানায় সুমনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে ভারতীয় পুলিশ।

ফুলগাজীর ইউএনও কিসিঞ্জার চাকমা জানান, বুধবার রাত ৯টায় সীমান্তবর্তী বদরপুর এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এতে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সোহেল রানার সঙ্গে পুলিশ ও ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যরা ছিলেন।

“অভিযানের এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা খানাবাড়িতে আশ্রয় নেয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই স্থানে অভিযান চালাতে গেলে মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়।”

ইউএনও বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের  হামলায় আনসারের ল্যান্স নায়েক মীর নওশাদ আলী নিহত হন এবং তার অস্ত্রও কেড়ে নেওয়া হয়। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা এগিয়ে গেলে মাদক ব্যবসায়ীরা তাকেও কুপিয়ে আহত করে।

“তার সাথে থাকা সোর্স সুমনকে মারধর করে অপহরণ করে ভারতের দিকে নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ ১৪টি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।”

ইউএনও বলেন, আহত ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানাকে প্রথমে ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। খবর পেয়ে মধ্যরাতে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

নিহত আনসার সদস্যের অস্ত্র ও গুলি বিএসএফ জব্দ করেছে বলেও তিনি জানান।

আনসার ও ভিডিপির উপ-মহাপরিচলেক দিলীপ কুমার ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে বলেন, নিহত আনসার সদস্যের পরিবারকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।

লাশের দাফন কাফনের জন্য তাক্ষণিকভাবে তিনি ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেন। 

নিহত মীর নওশাদ আলীর বাড়ি রাজশাহী বলে জানা গেলেও বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।

ফেনী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুার উক্যসিং বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমেকে বলেন, পুলিশ লাশ গ্রহণ করেছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।

অনুপ্রবেশের অভিযোগে সুমনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ও তিনি নিশ্চিত করেন।