শাবির ভর্তি ফি: ৪ মাসেও বাড়তি টাকা ফেরত দেয়নি কর্তৃপক্ষ

চার মাস পেরিয়ে গেলেও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তির আবেদনের সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত টাকা ফিরিয়ে দেয়নি কর্তৃপক্ষ।

হোসাইন ইমরান, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2017, 12:48 PM
Updated : 9 March 2017, 12:48 PM

গত বছরের ৭ নভেম্বর থেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে ভর্তি কমিটি বলেছিল। কিন্তু এখনও তা কার্যকরের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে গত ১৬ অক্টোবর ভর্তি ফরম বিতরণ শুরু করে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আগের বছরের তুলনায় এবার ৩৩ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ আন্দোলনে নামলে ১৮ অক্টোবর কর্তৃপক্ষ ভর্তির আবেদনের মূল্য কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

ছয় হাজার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী আবেদনে অতিরিক্ত টাকা খরচ করেছেন বলে গত ৭ নভেম্বর ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক এ এইচ এম বেলায়েত হোসাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ওই সময় বলেন, "শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা অতিরিক্ত টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা আছে।

“আমরা ১০ নভেম্বর আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নেব কীভাবে ভর্তিচ্ছুদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া যায়। যারা পরীক্ষা দিতে আসবে তাদের টাকা তখনই ফিরিয়ে দেওয়া হতে পারে। আবার পরীক্ষার্থীরা যে ফোন নম্বর দিয়ে আবেদন করেছে, সেখানে যোগাযোগ করেও অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দেওয়া হতে পারে।”

ভর্তি পরীক্ষার দুই দিন আগে ২৪ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলনে বেলায়েত হোসাইন জানান, পরীক্ষার হলেই শিক্ষার্থীর কাছে তাদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

ওই সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য আমিনুল হক ভূইয়াও উপস্থিত ছিলেন।

কিন্তু ২৬ নভেম্বর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে পরীক্ষায় ব্যাঘাত হওয়ার আশঙ্কা দেখিয়ে বাড়তি টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি।

নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে শিক্ষার্থীদের ফেরত না দিলে গত ৪ ডিসেম্বর ‘শাবির ভর্তি ফি: বাড়তি টাকা ফেরত দেয়নি কর্তৃপক্ষ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

এ সংবাদ প্রকাশের পর ৬ ডিসেম্বর ‘অতিরিক্ত’ টাকা ফিরিয়ে দিতে পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক আহমদ কবির, কমম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক রেজা সেলিম ও জহিরুল ইসলামকে নিয়ে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন অধ্যাপক বেলায়েত হোসাইন।

তখন তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “কমিটি শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত টাকা বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের ইলেক্ট্রনিক মানি ট্র্যান্সফার সার্ভিসের মাধ্যমে ফেরত প্রদান করবে। অতিরিক্ত টাকা ফেরত পাঠানোর খরচ বহন করবে বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের এসএমএস মাধ্যমে অবহিত করবেন তারা।”

এ বিষয়ে ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব বেলায়েত হোসাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অনেক শিক্ষার্থীই বিভিন্ন কম্পিউটারের দোকান থেকে ফরম কিনেছিলেন। তাই তাদের টাকাটা ফিরিয়ে দেওয়াটা একটু ঝামেলা।

“পোস্ট অফিসের ইলেক্ট্রনিক মানি ট্র্যান্সফার সার্ভিসের মাধ্যমে ফেরত প্রদানের কথা ছিল। তবে মাত্র ছয় হাজার শিক্ষার্থীর জন্য এতগুলো ফরম পূরণ করতে ‘পোস্ট অফিস’ রাজি হচ্ছে না। আবার বিকাশের মাধ্যমেও দেওয়া যাচ্ছে না। তবে টাকা ফিরিয়ে দিতে আমরা কাজ করছি।”