খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলার রায় ৮ মার্চ

সিলেটে কলেজছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসকে হত্যার চেষ্টার দায়ে ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের সাজা হবে কি না, তা জানা যাবে ৮ মার্চ।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 March 2017, 09:36 AM
Updated : 5 March 2017, 09:44 AM

সিলেটের মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা ওইদিন আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।

রোববার দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বিচারক রায়ের এই দিন ঠিক করে দেন বলে পিপি মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ জানান।

তিনি বলেন, “আদালত রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শুনেছেন। দণ্ডবিধির ৩২৬, ৩২৪ ও ৩০৭ ধারায় রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে আসামির অপরাধ প্রমাণ করতে পেরেছে। আশা করছি, রায়ে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে।”

অন‌্যদিকে আসমিপক্ষের আইনজীবী সাজ্জাদুর রহমান বলেন, “বেশ কিছু গ্রাউন্ডে আমরা আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করেছি। আশা করছি, আদালত সে বিষয়গুলো বিবেচনা করে রায় দেবে। বদরুল খালাস পাবে বলে আশা করছি।”

এই আইনজীবীর দাবি, ঘটনার সময় বদরুল মাদকাসক্ত ছিলেন।

“তাই সে সময় সে কি করেছে, তা বোঝেনি। এছাড়া বদরুল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী ছাত্র। সে বিষয়েও আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।”

গত ৩ অক্টোবর সিলেটের এমসি কলেজ কেন্দ্রে স্নাতক পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে হামলার শিকার হন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক (পাস কোর্স) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলমের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার মাথার খুলি ভেদে করে মস্তিষ্কও জখম হয়।

ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে তিন দফা অস্ত্রোপচারের পর অনেকটা সুস্থ হন খাদিজা। শরীরের বাঁ পাশ স্বাভাবিক সাড়া না দেওয়ায় চিকিৎসার জন্য স্কয়ার থেকে তাকে পাঠানো হয় সাভারের সিআরপিতে।

সিআরপিতে তিন মাসের চিকিৎসা শেষে শুক্রবার বাড়ি ফেরেন কলেজপড়ুয়া এই তরুণী।

খাদিজার ওপর হামলাকারী বদরুলকে ঘটনাস্থল থেকে ধরে তখনই পুলিশে দেয় জনতা। ঘটনার পরদিন খাদিজার চাচা আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন। বদরুলকে বিশ্ববিদ্যালয় ও সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

মামলার তদন্তে নেমে খাদিজাকে কোপানোর ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। বদরুল নিজেও অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ পরান থানার এসআই হারুনুর রশিদ ৮ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এরপর ২৯ নভেম্বর ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার শুরু হয় সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে।

এ মামলায় বাদীপক্ষে মোট ৩৪ জনের সাক্ষ‌্য শুনেছে আদালত। খাজিদা নিজেও গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে গিয়ে নিজের জবানবন্দি তুলে ধরেন।

সাক্ষ‌্যে খাদিজা বলেন, ৫-৬ বছর আগে তাদের বাড়িতে লজিং মাস্টার হিসেবে থাকতেন বদরুল। সে সময় থেকেই তাকে উত্যক্ত করে আসছিলেন।

“বদরুলের নৃশংস হামলায় আমি সারা জীবনের জন্য প্রতিবন্ধী হয়ে গেছি। আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি,” সাক্ষ‌্যে বলেন খাদিজা।

সাক্ষ‌্য শেষে যুক্তিতর্ক পর্যায়ে এসে আদালত বদল হয় এ মামালার। তিনটি ধারার মধ্যে একটিতে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার এখতিয়ার হাকিম আদালতে না থাকায় তা দায়রা আদালতে বদলি করা হয়।