উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও যাচাই-বাচাই কমিটির সদস্যসচিব আলিমুন রাজিব জানান, যথাযথ তথ্য-প্রমাণ না থাকায় মেয়র মিরু ও তার ভাইসহ ৩৩ জনকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
সমকালের শাহজাদপুর প্রতিনিধি আব্দুল হাকিম শিমুল হত্যামামলার প্রধান আসামি হিসেবে শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র মিরু কারাগারে রয়েছেন।
ইউএনও আলিমুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র ও মুক্তিযোদ্ধা সনদে দেওয়া জন্মতারিখের মধ্যে মিল না থাকা, যাচাই-বাছাইয়ের সময় উপস্থিত না হওয়া বা পক্ষে কোনো প্রমাণপত্র হাজির না করা প্রভৃতি কারণে এই ৩৩ জন বাদ পড়েছেন।
এই ৩৩ জনের মধ্যে ২৭ জন ভাতা পেতেন বলে তিনি জানান।
মেয়র মিরু ও তার ভাই হিরোর বাদ পড়া সম্পর্কে ইউএনও বলেন, মিরুর মুক্তিযোদ্ধা সনদে জন্মতারিখ লেখা হয়েছে ১৯৫৫ সালের ১ জানুয়ারি। আর জাতীয় পরিচয়পত্রে তার জন্মতারিখ হলো ১৯৫৯ সালের ১ জানুয়ারি। এই অমিলের কারণে তাকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
“আর তার ভাই হিরো যাচাই-বাছাইয়ের সময় উপস্থিত হননি। তার পক্ষে কেউ কোনো প্রমাণও দাখিল করেনি। এ কারণে তার নামও বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।”
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এই তালিকা চূড়ান্ত করে পরদিন প্রকাশ করা হয় বলে তিনি জানান। আর এর পরপরই হাইকোর্ট সারাদেশে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম স্হগিত করার আদেশ দেয়।
শাহজাদপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার বিনয় পাল মিরুর মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের পক্ষে মত দিয়েছেন।
বিনয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মিরু মুক্তিযোদ্ধা নন। ভুয়া জন্ম নিবন্ধনে বয়স কমিয়ে জাল-জালিয়াতি করে ২০১৩ সালে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তালিকাভুক্ত হন।
“সে সময় বিষয়টি শাহজাদপুরের তৎকালীন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও ভাতা বিতরণ কমিটি মিরুর ভাতা বন্ধ করে দেয়। যাচাই-বাছাইয়ের সময়ও বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে।”
শাহজাদপুরের রূপ গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আজাদ শাহনেওয়াজ ভূঁইয়া বলছেন, “মিরু কোথায় যুদ্ধ করেছেন তা আমরা কেউ জানি না। ১৯৭১ সালে তার বয়স ১৩ বছরের কম ছিল।”