তিন জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বাগেরহাটে ও বগুড়ায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2017, 12:27 PM
Updated : 2 March 2017, 01:57 PM

বৃহস্পতিবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুজন এবং সুন্দরবনে একজন নিহত হন। বুধবার রাতে বগুড়ায় নিহত হন এক জেএমবি নেতা।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বিজয়নগর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক ‘ডাকাত’ ও এক ‘মাদক কারবারী’ নিহত হয়েছেন বলে বিজয়নগর থানার ওসি আলী আরশাদ জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের খেতাবাড়ি ও সীমান্তবর্তী সিংগারবিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন উপজেলার কালিসীমা গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে ভুলু ডাকাত ওরফে ভইুল্লা ডাকাত ও সিংগারবিল ইউনিয়নের নলগড়িয়া গ্রামের আলফাজ আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম নুরু।

ভুলু বিজয়নগর থানার এক নম্বর তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী এবং তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে ওসি জানান।

ওসি আলী আরশাদ বলেন, খেতাবাড়ি এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতির সময় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা খবর পেয়ে অভিযান চালান। গোয়েন্দা পুলিশের টহল দল ডাকাতদের ধাওয়া করলে তারা পুলিশের দিকে গুলি ছোড়ে।

“পুলিশও পাল্টা গুলি করলে ভুলু ডাকাত ঘটনাস্থলেই মারা যান।”

এ সময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি পাইপগান দুই রাউন্ড কার্তুজ এবং দুটি ছোরা উদ্ধার করে বলে জানান তিনি।

এদিকে, ভারত সীমান্তবর্তী সিংগারবিল এলাকার মেরাশানি বাজারের পূর্বপাশের পেয়ারা বাগানে ‘মাদক বিক্রেতারা’ গাঁজা পাচার করছে খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায় বলে জানান ওসি।

তিনি বলেন, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক কারবারীরা গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। গুলিতে নুরুল ইসলাম আহত হন।

“তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।”

বাগেরহাট

সুন্দরবনে কথিত বন্দুকযুদ্ধের পর এক ‘বনদস্যুর’ গুলিবিদ্ধ লাশ ও অস্ত্র উদ্ধারের কথা জানিয়েছে র‌্যাব।

র‌্যার-৮ এর উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান জানান, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বাগেরহাটের শরণখোলা রেঞ্জের সুখপাড়ার চর এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

নিহতের নাম বিল্লাল মীর ওরফে কানা বিল্লাল বলে জানালেও তার বিস্তারিত পরিচয় জানাতে পারেনি র‌্যাব।

মেজর আদনান বলেন, সুন্দরবনের দস্যু দমনের নিয়মিত অভিযান চালাতে র‌্যাবের একটি দল সেখানে যায়।

“এ সময় র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে বনদস্যুরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি করে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়।”

প্রায় আধাঘণ্টা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ এক পর্যায়ে বনদস্যুরা পিছু হটলে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে র‌্যাব সদস্যরা একজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে বলে জানান র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।

পরে সেখান থেকে পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৭৭টি গুলি উদ্ধার করা হয় বলেও জানান তিনি।

আদনান বলেন, “স্থানীয় জেলেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিল্লালকে শামসু বাহিনীর সদস্য বলে শনাক্ত করেছে।”

শামসু ও তার দলের লোকজন সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল বলে জানান তিনি।

এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সুন্দরবন শেলা নদীর মৃগমারী শাখা খাল এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে বনদস্যু শামসু বাহিনীর প্রধান শামসু ওরফে কোপা শামসু নিহত হয়েছিলেন।

বগুড়া

শেরপুর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ‘জেএমবির সামরিক শাখার উত্তরাঞ্চলীয় কমান্ডার’ নিহত হয়েছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, বুধবার রাতে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের জামনগর এলাকায় গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আমিনুল ইসলাম রনি ওরফে আলামিন (২৩) রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বুজরুক রাজারামপুর গ্রামের দুরুল হকের ছেলে।

পুলিশ কর্মকর্তা সনাতন বলেন, গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল তার অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে মঙ্গলবার রাজশাহীর গোদাগাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় গোয়েন্দা পুলিশের দুই সদস্যকে ছুরিকাঘাত করেন তিনি।

“আমিজুলকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তার কাছে অস্ত্র রয়েছে বলে স্বীকার করেন। পরে তাকে নিয়ে বুধবার রাত ৩ টায় অস্ত্র উদ্ধারে  ভবানীপুরে গেলে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়।”

পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে দৌড়ে পালানোর চেষ্টার সময় দুইপক্ষের গোলাগুলির  মধ্যে পড়ে আমিজুল গুলিবিদ্ধ হলে হাসপাতালে নেওয়া পথে মারা যায় বলে জানান তিনি।

ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি বিদেশি পিস্তল ,তিন রাউন্ড গুলি ও দুটি ম্যাগজিন উদ্ধার করেছে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।