টেকনাফের আনসার ক্যাম্পের আরও ৬ অস্ত্র উদ্ধার, পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের ‘আনসার ক্যাম্পের লুট হওয়া’ আরও ছয়টি এসএমজি উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2017, 03:03 PM
Updated : 1 March 2017, 04:00 PM

মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকালে পর্যন্ত বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তমব্রুর গহীন পাহাড়ে এ অভিযান চালানো হয় বলে র‌্যাব জানিয়েছে।

এ নিয়ে আনসার ক্যাম্পের লুট হওয়া ১১ অস্ত্র উদ্ধার হলো। এর আগে পাঁচটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল।

বুধবারের উদ্ধার অস্ত্রগুলো আনসার ক্যাম্প থেকে লুট হওয়া ছয় এসএমজি বলে নিশ্চিত করেছেন আনসারের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান খান।

এদিকে, অস্ত্র উদ্ধারের খবরে বুধবার দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ঘটনাস্থলে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।

অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কক্সবাজারের টেকনাফ রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে কমান্ডার হত্যাসহ আনসার ক্যাম্পে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

“যারা এসব অস্ত্র-গুলি লুট করেছিল তাদেরসহ ১১টি অস্ত্র র‌্যাব গ্রেপ্তার করেছে কয়েক মাসের চেষ্টায়। দুধাপে অস্ত্র উদ্ধার এবং এ ঘটনার হোতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অক্লান্ত পরিশ্রম করে এসব লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার করেছে, বলেন মন্ত্রী।

এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবির সংলগ্ন এলাকা থেকে নুরুল আলম (৩৫) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাকে আনসার ক্যাম্পে হামলার ‘হোতা’ বলছে র‌্যাব।

র‌্যাব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আশেকুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার রাতে উখিয়ার কুতুপালং এলাকা থেকে নুরুল আলম (৩৫) নামের এক ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে’ গ্রেপ্তার করা হয়।

“পরে তার স্বীকারোক্তি মতে, মঙ্গলবার রাতভর নাইক্ষ্যংছড়ির গহীন পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালায় র‌্যাব। বুধবার সকালে পাহাড়ের ঝোপ-জঙ্গলের ভিতর মাটির চাপা দিয়ে রাখা অবস্থায় আনসার ক্যাম্প থেকে লুট হওয়া ছয়টি এসএমজি ও ছয়টি গুলি উদ্ধার করা হয়।”

আশেকুর রহমান জানান, এর আগে গত ৯ জানুয়ারি রাতে উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবির এলাকায়

অভিযান চালিয়ে টেকনাফে আনসার ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় জড়িত দুই ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে’ গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মতে ওই রাত থেকে পরদিন (১০ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ির গহীন পাহাড়ি এলাকা থেকে আরেক ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে’ গ্রেপ্তার এবং লুট হওয়াসহ মোট নয়টি অস্ত্র ও ১১৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এসব অস্ত্রের মধ্যে আনসার ক্যাম্প থেকে লুট হওয়া পাঁচটি ছিল।

গত বছর ১৩মে ভোর রাতে টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের আনসার ক্যাম্পে সশস্ত্র হামলায় নিহত হন ক্যাম্প কমান্ডার মো. আলী হোসেন এবং লুট করা হয় ১১টি বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬৭০টি গুলি। হামলার জন্য পুলিশ ও র‌্যাব রোহিঙ্গাদের দায়ী করে আসছিল।

প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “রোহিঙ্গারা নির্যাতিত। নির্যাতনের শিকার হয়ে তারা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছেন। এখানে তারা ততদিন থাকবেন, যতদিন নিজের দেশকে নিরাপদ মনে না করবেন।”

প্রেস ব্রিফিংকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমদ, আনসারের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান খান প্রমুখ।