খুলনা অঞ্চলে ধর্মঘটে অটল শ্রমিকরা

আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর খুলনার জেলা প্রশাসক পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের কথা জানালেও শ্রমিকরা বলছেন, তাদের কর্মসূচি বহাল রয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকও যশোর-খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2017, 06:18 PM
Updated : 27 Feb 2017, 06:51 PM

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী সোমবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ধর্মঘট প্রত্যাহারের প্রশ্নই ওঠে না।”

তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের মৃত্যুর জন্য দায়ী চুয়াডাঙ্গার বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার পর গত রোববার থেকে খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলায় ধর্মঘট শুরু করেন পরিবহন শ্রমিকরা।

ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে সোমবার দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউজে বৈঠকে বসেন খুলনার জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান।

বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিদের বলেছিলেন, আইনি এই বিষয়ে প্রশাসন সাধ্যমতো সহযোগিতার আশ্বাস দিলে শ্রমিক নেতারা ‘ধর্মঘট প্রত্যাহারে সম্মত হন’।

তবে এরপর বিভিন্ন জেলার পরিবহন শ্রমিক নেতারা ধর্মঘট বহাল থাকার কথা জানান।

সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস ট্রাক সড়ক পরিবহনের শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রিপন মণ্ডল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খুলনা থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হলেও আমরা করিনি। আমাদের বাস চলবে না।”

পরিবহন ধর্মঘটের কারণে ট্রেনে অতিরিক্ত ভিড়। সোমবার সকালে যশোর থেকে তোলা ছবি

শ্রমিক ফেডারেশনের খুলনা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি, জেলা প্রশাসক কীভাবে তা প্রত্যাহার করেন?

“রাতে ঢাকায় আমাদের বৈঠক হয়েছে। সে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে ধর্মঘট এখনও চলছে।”

এরপর যোগাযোগ করা হলে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওসমান তাদের কর্মসূচি বহাল থাকার কথা জানান।

এদিকে বৈঠকের সিদ্ধান্তের পর শ্রমিক নেতাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার না করাকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলেছেন খুলনার জেলা প্রশাসক নাজমুল।

তিনি রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৈঠক ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হল, প্রকাশ্যে ঘোষণাও দিল। এখন বলা হচ্ছে ধর্মঘট প্রত্যাহার হয়নি। তা তো বিশ্বাসঘাতকতা।”

আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় পরিবহন শ্রমিকদের এই ধর্মঘট ডাকার সমালোচনা করেছেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি সোমবার সাংবাদিকদের বলেছেন, “যে রায় নিয়ে আপনারা ধর্মঘট পালন করছেন, সে রায় তো জনগণ দেয় নি। তাহলে কেন জনগণকে কষ্ট দিচ্ছেন? রায় পছন্দ না হলে উচ্চ আদালতে গিয়ে আপিল করুন।”

অন্যদিকে কর্মসূচির সমর্থনে নৌমন্ত্রী ও শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান বলেছেন, শ্রমিকরা তাদের দাবি আদায়ে ধর্মঘট ডাকতেই পারে।