কুনিও হোশি হত্যা মামলার রায় মঙ্গলবার

জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি হত্যা মামলার আসামি নিষিদ্ধ জঙ্গি দল জেএমবির ছয় সদস্যের সাজা হবে কি না- তা জানা যাবে মঙ্গলবার।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2017, 07:16 AM
Updated : 27 Feb 2017, 07:16 AM

রংপুরের বিশেষ জজ নরেশচন্দ্র সরকার ওইদিন সকাল ১১টার পর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন বলে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা জানান।  

ঢাকায় ইতালীয় নাগরিক চেজারে তাভেল্লা হতাকাণ্ডের পাঁচ দিনের মাথায় একই কায়দায় রংপুরে জাপানি নাগরিক হত‌্যার ওই ঘটনা সে সময় আন্তর্জাতিক গণমাধ‌্যমে আলোড়ন তোলে।

আইনজীবী রথীশ জানান, হত্যাকাণ্ডের ১৭ মাসের মাথায় আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, “সাম্প্রতিককালে জেএমবির হামলায় নিহত কোনো বিদেশি হত্যা মামলার এটাই প্রথম রায় দেওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি, আসামিরা সর্বোচ্চ সাজা পাবে”।

মামলার আসামি

এ মামলার ছয় আসামির মধ্যে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার টাঙ্গাইল পাড়ার জেএমবির রংপুর অঞ্চলের কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মন্ত্রী (৩৩), জেএমবি সদস্য ইছাহাক আলী (৩৪), লিটন মিয়া ওরফে রফিক (৩২), আবু সাঈদ (২৮) ও সাখাওয়াত হোসেন (৩০) কারাগারে আছেন।

আরেক আসামি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার মকর রাজমাল্লী এলাকার আহসান উল্লাহ আনসারী ওরফে বিপ্লব (২৪) এখনও পলাতক।

বিপ্লব রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। গত বছরের জানুয়ারি থেকে তিনি অনুপস্থিত বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক ইব্রাহীম কবীর জানিয়েছেন।

এ মামলর অভিযোগপত্রে আরও দুজনের নাম ছিল। তাদের মধ্যে পলাতক জেএমবির সদস্য সাদ্দাম হোসেন ওরফে রাহুল গত ৫ জানুয়ারি রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।  

আর নজরুল ইসলাম ওরফে বাইক নজরুল ওরফে হাসান গত বছরের ২ অগাস্ট ভোরে রাজশাহীতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।

২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর সকালে নগরীর মুন্সিপাড়ার ভাড়া বাড়ি থেকে রিকশায় করে কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের আলুটারি গ্রামে ঘাষের খামারে যাওয়ার পথে ৬৬ বছর বয়সী জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন।   

ওই দিনই কাউনিয়া থানার তৎকালীন ওসি রেজাউল করিম বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউনিয়া থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী গত বছরের ৩ জুলাই জেএমবির আট সদস্যের বিরুদ্ধে রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

পরে মামলাটি বিশেষ জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, হোশি কোনিওকে লক্ষ্য করে পর পর তিনটি গুলি করেন জেএমবির আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মন্ত্রী। মোটর সাইকেলে তারা তিনজন ছিলেন। গুলি করার পর মোটরসাইকেলে করে তারা পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলেই মারা যান কোনিও। 

রথীশ চন্দ্র জানান, ৫৭ জন সাক্ষির মধ্যে ৫৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে ৬ ফেব্রুয়ারি এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। দুই সাক্ষি ভারতে পালিয়ে যাওয়ায় আদালত সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ ঘোষণা করেন।  

আসামী সাখাওয়াতের পক্ষে ১৪ ফেব্রুয়ারি একজন সাফাই সাক্ষি দেন বলে জানান তিনি।