রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষ জাতিসংঘ দূতের

জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াংহি লি তিন দিনের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন শেষে কক্সবাজার ত্যাগ করেছেন।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2017, 01:11 PM
Updated : 23 Feb 2017, 02:36 PM

বৃহস্পতিবার বিকালে বিমানযোগে ঢাকার উদ্দেশে লি কক্সবাজার ছাড়েন বলে জানান আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার সৈকত বিশ্বাস।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অভিযানে দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখতে লি গত রোববার ঢাকা আসেন। মঙ্গলবার কক্সবাজারে তার তিন দিনের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শুরু হয়। 

মঙ্গলবার কক্সবাজার এসে তিনি উখিয়ার বালুখালীতে নতুন করে গড়ে ওঠা অনিবন্ধিত শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন।

বুধবার পরিদর্শনে যান টেকনাফের নয়াপাড়ার নিবন্ধিত ও লেদার অনিবন্ধিত শিবির।

তৃতীয় ও শেষ দিন বৃহস্পতিবার সকালে ইয়াংহি লি উখিয়ার কুতুপালংয়ের নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনে রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ক প্রাপ্ত তথ্য তিনি প্রতিবেদন আকারে জাতিসংঘে জানাবেন। এর আগে দুদিন তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বললেও বৃহস্পতিবার তার প্রতিবেদনের বিষয়ে কথা বলেন।  

উখিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নুরুদ্দিন মো. শিবলী নোমান বলেন, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শনে প্রাপ্ত তথ্যাদি ইয়াংহি লি আগামী ১৩ মার্চ প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করবেন এবং প্রতিবেদনটি জাতিসংঘে জমা দেবেন। ওই প্রতিবেদনে শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের সময় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া সকল তথ্যাদি থাকবে।

শিবলী জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ইয়াংহি লি শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে উখিয়ার কুতুপালং পৌঁছেন। সেখানে প্রথমে তিনি নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির কার্যালয়ে যান। সেখানে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১০ রোহিঙ্গা নারী ও ১০ রোহিঙ্গা পুরুষের সঙ্গে কথা বলেন।

সেখান থেকে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে যান। ওই সময়ও তিনি বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেন বলে জানান শিবলী।

“এসময় ইয়াংহি লি রোহিঙ্গাদের খোঁজ-খবর নেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন। রোহিঙ্গারা তার কাছে মিয়ানমারে তাদের উপর চালানো নির্যাতন-নিপীড়নের চিত্র এবং পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন।”

তিন ঘণ্টার বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের পর দুপুর দেড়টার দিকে লি কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেন বলে জানান শিবলী।

পরিদর্শনের সময় লির সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মো. বাকী বিল্লাহ, উখিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুরুদ্দিন মো. শিবলী নোমান, ইউএনএইচসিআর ও আইওএমসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

কক্সবাজার সফরের প্রথমদিন উখিয়া থেকে ফিরে মঙ্গলবার রাতে জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন তিনি।

৯ অক্টোবর বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে একটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলায় নয় পুলিশ নিহত হওয়ার পর এই অভিযান শুরু করা হয়েছিল। এরপর থেকে প্রায় ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে বলে জাতিসংঘের হিসাব।