চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে ছয় দিন আগে মারা যান বাংলাদেশের দিনাজপুর সদর উপজেলার বরাইপুর গ্রামের বিমলচন্দ্র সরকারের স্ত্রী কনিকা রানী (৪৩)।
বিমল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কনিকা ফুসফুসের রোগে ভুগছিলেন। জমি বেচে দেড় লাখ টাকাসহ ছোট ছেলে টোকন মাকে নিয়ে বৈধভাবে ভারতের বেঙ্গালুরু যান গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর।
কদিন আগে চিকিৎসার জন্য আরও টাকার প্রয়োজনে টোকেন দেশে আসেন। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটে এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের বাসায় মাকে রেখে আসেন বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, এরপর ধারদেনা করে আরও দেড় লাখ টাকা নিয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি গিয়ে দেখেন মায়ের মুমূর্ষু অবস্থা। তড়িঘড়ি করে তাকে নেওয়া হয় মালদহ হাসপাতালে। অ্যাম্বুলেন্স চালক ভুল করে কনিকার ঠিকানা লেখেন বালুরঘাটের। এই ঠিকানা নিয়েই যত বিপত্তি।
বিমল বলেন, ঠিকানা বালুরঘাট লেখার কারণে হিলি স্থলবন্দরের ভারতীয় ইমিগ্রেশন পুলিশ লাশ বাংলাদেশে আনতে দেয়নি।
এরপর মায়ের লাশ নিয়ে টোকন যান ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ডিসি সঞ্জয় বসুর কাছে। আর কিছু জানেন না বিমলচন্দ্র। তিনি কেঁদে ফেলেন।
“একদিকে স্বজন হারানোর বেদনা, অন্যদিকে লাশ আদৌ পাব কি না জানি না। প্রিয়জনের লাশের সৎকার হবে কিনা এ নিয়ে আমরা এখন নির্ঘুম এক দুঃসহ জীবন যাপন করছি।”
নিহত কনিকার বড় ছেলে খোকন বলেন, “মায়ের লাশ দেশে ফেরত আনার জন্য ভারতে ছোট ভাই বিভিন্ন অফিসে ছুটোছুটি করছে। এখন কোথায় কী করছে জানি না। আমরা এখন কী করব তাও জানি না।”
দরিদ্র পরিবারটি সরকারের উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগও করতে পারছে না।
কনিকার লাশ দ্রুত দেশে আনার জন্য দুই দেশের সরকারের প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন শোকাহত পরিবারের স্বজন ও প্রতিবেশীরা।