শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, যাদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আবশ্যক বিষয় রয়েছে তারা অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে কম্পিউটার নিতে পারবে না।
অথচ কেরানীগঞ্জের জিনজিরা পীর মোহাম্মদ পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ১৭ জন এসএসসি পরিক্ষার্থী নবম ও দশম শ্রেণিতে অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে পড়েছেন কম্পিউটার, যাদের আবশ্যিক বিষয় রয়েছে আইসিটি।
গত বৃহস্পতিবার পরীক্ষার পর এই ১৭ পরীক্ষার্থীকে ডেকে প্রধান শিক্ষক মো. আবু রায়হান এ ‘দুঃসংবাদ’ দেন।
এই শিক্ষার্থীদের কয়েকজন হলেন মাহিন, রিমী, আয়েশা, খাদিজা, অন্তরা, উস্মিতা ও শতরুপা সরকার।
তারা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের কম্পিউটার শিক্ষক সাহেব আলী শাকিল নবম শ্রেণি থেকেই বলেছেন রেজিস্ট্রেশনে যারা ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আব্যশক বিষয় নিয়েছে তারা অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে কম্পিউটার নেওয়ার সুযোগ নেই।
সেক্ষেত্রে তাদের ওই বিষয়ের প্রাপ্ত নম্বর মূল নম্বরের সঙ্গে যোগ হবে না বলে তিনি (সাহেব আলী শাকিল) তাদের জানিয়েছেন বলে ওই শিক্ষার্থীদের ভাষ্য।
এরপর গত বছর প্রায় সময়ই তারা প্রধান শিক্ষককে এ বিষয়ে বলেছেন, কিন্তু প্রধান শিক্ষক বারবারই তাদের কোনো সমস্যা হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন।
তাই গত দুই বছর ধরে কম্পিউটার বিষয়ে পড়ে পরীক্ষার প্রাক্কালে এ খবরে তারা মুষড়ে পড়েছেন।
ওইদিন প্রধান শিক্ষক তাদেরকে অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে গার্হস্থ্য বিজ্ঞাতে পরীক্ষা দিতে বলেন। কিন্তু তাদের শিক্ষার্থীরা রাজি না হলে তিনি বোর্ডে এ বিষয়ে কথা বলবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শিক্ষার্থীরা চতুর্থ বিষয়ে ২ পয়েন্টের অতিরিক্ত পেলে তা মূল পয়েন্টের সঙ্গে যোগ হয়। এই বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পাওয়ার মতো।
সেক্ষেত্রে তাদের মূল জিপিএ-এর সঙ্গে চতুর্থ বিষয়ের পয়েন্ট যোগ না হলে তাদের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে, বলেন তিনি।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. আবু রায়হান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভুল আমাদের হয়নি। আমরা সঠিকভাবেই ফরম পূরণ করে বোর্ডে পাঠিয়েছিলাম। ভুল করেছে বোর্ড। ইতিমধ্যে ঢাকা বোর্ড কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে দরখাস্ত করা হয়েছে। আশা করছি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”
গত এক বছর ধরে শিক্ষার্থীরা বিষয়টি ঠিক করার কথা বললেও তিনি কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেননি কেন জানতে চাইলে এর সঠিক কোনো জবাব দিতে পারেননি প্রধান শিক্ষক আবু রায়হান।
এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নিলুফা জাহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারও নেই। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”